কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

আপডেট: মে ২২, ২০২১
0

মাদারীপুর: মাদারীপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মারুফ হোসাইনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে বিয়ের প্রেলাভনে ধর্ষণের অভিযোগে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মারুফের হোসাইনের (৩০) সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ করেছে ওই নির্যাতিতা ছাত্রলীগ নেত্রী। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক। বয়স ২৪ বছর। এছা্ড়াও তিনি ৫ বছরের একটি পুত্র সন্তানের জননী।

বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় ছাত্রলীগ নেত্রী বাদী হয়ে মারুফসহ তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। মামলার অপর আসমিরা হলেন- মারুফের ভাই আরিফ হাওলাদার এবং মা মেহেরুননেছা।
মারুফ হোসাইন মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পূর্বপেয়ারপুর কুমারেরট্যাক ৮নং এলাকার মৃত কাদের হাওলাদারের ছেলে। সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক।

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে মারুফের সাথে পরিচয় হয়। এক বছর আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন যেতে না যেতে বিয়ের প্রলোভনসহ নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে মারুফ। এর পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মারুফ দিনের পর দিন জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক করেন। পরবর্তীতে তাকে বিয়ের চাপ দিলে মারুফ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

একপর্যায়ে মারুফ ওই তরুণীর কাছে বিয়ের শর্ত হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। সম্পূর্ণ টাকা দিতে ব্যর্থ হলেও মারুফ বিভিন্ন অজুহাতে থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সর্বশেষ গত শনিবার (১৬ মে) সকাল ৭টার দিকে তাকে বিয়ে করবে বলে নিজ গ্রামের বাড়িতে ঢেকে নেয় মারুফ। যাওয়ার পর তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলা হয়। কিন্তু বিষয়টি না মানলে মারুফ ও তার ভাই আরিফ হাওলাদার (২৭) ও তার মা মেহেরুনন্নেছা (৫৫) ওই তরুনীকে শারীরিক নির্যাতন করে বলে জানা যায়।

মামলার তথ্য মতে, মারুফ ও তার ভাই গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। হত্যার পর তারা তার লাশ পানির ট্যাংকিতে গুম করে রাখার পরিকল্পনা করে। তখন তাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চান। যাতে কোনো আইনের আশ্রয় না নিতে পারে এ মর্মে তাদের কাছে ভিডিও বক্তব্য দিতে বলে এবং ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করতে বলে মারুফ। পরে তিনি জীবন বাঁচাতে ভিডিও বক্তব্য দেন এবং স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করেন। এ সময় তারা ওই ছাত্রলীগ নেত্রীর কাছে সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা ও গলার চেন, কানের দুল, হাতের আংটি ও মোবাইল ফোন রেখে দেয়।

এ ব্যাপারে নির্যাতিতা তরুণী বলেন, মারুফ আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছে, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়েছে। যার কারণে আমি আমার স্বামীকে তালাক দেই। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার বাসায় নিয়ে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমি এর বিচার চাই এবং আমি আমার অধিকার চাই।

এবিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মারুফ হোসাইন বলেন, এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এর আগে অনেক ছেলেদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে। স্বামী থাকার পরেও সে বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে পরকীয়া করে। এজন্য তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, মারুফের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা আসামিদের ধরতে চেষ্টা করছি।