গাজীপুর প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি)’র ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস সোমবার বর্ণাঢ্য আয়োজন ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এ দিনটিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সালনাস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচির সূচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া জাতীয় পতাকা ও ট্রেজারার প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে দিবসটির শুভ উদ্বোধন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। র্যালীর শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, ১৯৯৮ সালের আজকের এ দিনে দেশে সর্বপ্রথম জাতির পিতার নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে, যার জন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত। তিনি সশ্রদ্ধ চিত্তে জাতির পিতাকে স্মরণ করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
পরে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ভাচুর্য়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মেহের আফরোজ চুমকী এমপি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় আমার ভালোলাগার অন্যতম জায়গা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যা বঙ্গবন্ধু নামে স্বার্থকতা নিয়ে মানসম্পন্ন উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ বিশ্ববিদ্যালটি প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। তিনি দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের অধ্যাবসায়ের প্রতি অধিক মনোযোগী হওয়ার এবং দেশের উন্নয়নে শিক্ষালব্ধ জ্ঞান কাজে লাগানোর আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তোরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সকলের সম্মিলিত ভূমিকা এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে আজ সবকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা হতে যাচ্ছে তা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তিনি পরিবেশের বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরো বেশী গবেষণা করতে হবে যা দেশ-বিদেশে আমাদের সম্মান বয়ে আনবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতার গল্পগুলো আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে মেহের আফরোজ চুমকী সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধুর নামে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ হাটিহাটি পা পা করে ২৪ বছরে উপনীত হয়েছে। কৃষি গবেষণা কাজের মাধ্যমে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে যার ফলে আমরা দশগুণেরও বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারছি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, কৃষি গবেষণা অব্যহত থাকবে, দেশ এগিয়ে যাবে, দেশ আজ উন্নয়নের রোডম্যাপে উঠে গেছে।
সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যাবলী ও সাফল্য তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তৃতা করেন।
দুপুরে বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচি সমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদীয় ডীন, পরিচালক, প্রক্টর, প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।
