সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনা বেচার সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও ফেসবুক পেজ এ্যাডমিন মোঃ শাহরিয়ার ইমরানসহ ৫ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব

আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১
0

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনা বেচার সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও ফেসবুক পেজ এ্যাডমিন মোঃ শাহরিয়ার ইমরানসহ ০৫ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ভয়ঙ্কর কিডনি প্রতারচক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র‍্যাব-৫, র‍্যাব-২ ও র‍্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট ও রাজধানীর নর্দা এলাকা থেকে কিডনি কেনাবেচা চক্রের অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।

আটকরা হলেন চক্রের মূলহোতা মো: শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো: মেহেদী হাসান (২৪), মো: সাইফুল ইসলাম (২৮), মো: আব্দুল মান্নান (৪৫) ও মো: তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীদের চারটি পাসপোর্ট, মেডিক্যাল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, পাঁচটি মোবাইল ও দেশী-বিদেশী মুদ্রা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সদস্যরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহক ও ডোনারদের আকৃষ্ট করছে। একইসাথে অপরাধের নেটওয়ার্ক বিস্তার করছে। এ কারণে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‍্যাব।

বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামী শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহী বিত্তশালী কিডনি রোগী এবং বিভিন্ন এলাকা হতে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিডনি ডোনার সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতেন। ইমরান ফেসবুক এ “বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা” এবং “কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা” নামক ০২টি পেজের এডমিন এবং এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রয়ের জন্য প্রায় শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করেছেন।

গ্রেফতারকৃত চক্রের অন্যতম আসামী মোঃ আব্দুল মান্নান মূলত ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই অনৈতিক কাজে প্রলুব্ধ করেন এবং ইতোপূর্বেও এই অপরাধের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট গ্রেফতার হোন। তার বিরুদ্ধে মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ৬ টির অধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মোঃ তাজুল ইসলাম @ তাজু মান্নানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন এবং তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত অপর দুই আসামি, সাইফুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের পার্শ্ববর্তী দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট, মেডিকেল ভিসা এবং অন্যান্য কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে প্রস্তুত করতেন। এ কাজে তারা জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করতেন বলে স্বীকার করেন।

গ্রেফতারকৃত এই চক্রটি কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের পার্শ্ববর্তী দেশে কিডনি চিকিৎসায় সহায়তার নাম করে, অর্থ আয়ের উদ্দেশ্য, কিডনি প্রতিস্থাপনে উৎসাহিত করে। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদান এর আড়ালে তারা এই ভয়ঙ্কর কিডনি কেনা বেচার সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।