গত ৯ ফেব্রুয়াুরি গোপালগঞ্জ থেকে এক ভদ্রলোক বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ফেসবুক পেইজে একটি বার্তা প্রেরন করেন। তিনি বলেন, তার পরিচিত ও প্রতিবেশি এক মাদ্রাসা ছাত্রী কিশোরী অনলাইন সম্পর্কে জড়িয়ে রিফাত শেখ ওরফে আকাশ নামে এক যুবকের দ্বারা প্রতারনার শিকার হয়েছে।
মেয়েটির সাথে প্রেমের অভিনয় করে ও তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে অনলাইনেই মেয়েটির কিছু অপ্রীতিকর ছবি ও ভিডিও ধারন করে আকাশ। পরবর্তীতে এ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে নানাভাবে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে আকাশ। হাতিয়ে নিতে থাকে টাকা পয়সা ও গহনা। শুরুতে মেয়েটি তার পরিবারকে কিছু জানাতে পারেনি। এরই মধ্যে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। পরিবারকে বিষয়টি জানানোর পর পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়েটিকে তার সম্মতিক্রমে তড়িঘড়ি বিয়ে দেয়া হয়।
মেয়েটির স্বামী ও তার স্বামীর আত্মীয় স্বজনের কাছে মেয়েটির নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে বিয়েটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। এর কিছুদিন পর পরিবারের উদ্যোগে মেয়েটিকে পুনরায় বিয়ে দেয়া হয়। রিফাত শেখ ওরফে আকাশ একইভাবে এ দ্বিতীয় বিয়েটিও ভেঙ্গে দেয়। সর্বশেষ আর কোনো উপায়ান্তর না দেখে প্রতিবেশি এক ভদ্রলোকের সাথে পরামর্শ করে মেয়েটি ও তার পরিবার। এই ভদ্রলোক সব কথা শুনে নিজেই বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেইজের ইনবক্সে একটি বার্তা প্রেরন করে মেয়েটির জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা চান। উল্লেখ্য, এ যুবকের সুষ্পষ্ট কোনো ঠিকানা বা বিস্তারিত পরিচয় জানা ছিল না মেয়েটির। সে শুধু জানতো ছেলেটির বাড়ি বগুড়া।
বার্তাটি পাওয়ার সাথে সাথেই মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমান ও তথ্যাদি সংগ্রহ করে, এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসিকে অবগত করে এবং উক্ত যুবককে সনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পুলিশ সুপার বগুড়া মোঃ আলী আশরাফ ভূঞাকে অনুরোধ করে। পুলিশ সুপার বগুড়া তাৎক্ষনিকভাবে তার ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম গঠন করেন। এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্ভাব্য নানাস্থানে রেইড দেয়
। অবশেষে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থ্রিঃ ভোর রাতে আকাশকে কে বগুড়া থানাধীন কলোনী চক ফরিদ মহল্লার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত আকাশ দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে বিভিন্ন মেয়েকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে বন্ধুত্ব করতো। পরে তাদের সাথে প্রেমের অজুহাতে অন্তরঙ্গ হয়ে সেইসব মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারন ও তা ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল।
পরবর্তীতে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাদীর উপস্থিতিতে দ্রুততম সময়ে পর্ণোগ্রাফি আইনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনে মামলা রুজু করেন। পরে, জেল হাজতে প্রেরনের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ টিম পাঠিয়ে আসামীকে বগুড়া থেকে গোপালগঞ্জে নিয়ে আসা হয়।
উল্লেখ্য, এ ধরনের যে কোনো প্রতারনার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁঁশিয়ারি উচ্চারন করছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।