নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ সরকারের অবৈধ আইনে গঠিত নির্বাচন কমিশন বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন কমিশনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি অবৈধ সরকার অবৈধ আইনের মাধ্যমে এ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। সুতরাং পরবর্তী পর্যায়ে কী হবে সেটা আমাদের দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন।’
রবিবার (১৩ মার্চ) দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, স্বল্প আয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে দেশের মানুষ আজ রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু টিসিবির পণ্য সারাদেশে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ দিতে পারে। সারাদেশের মানুষ আজকের চড়া দামে জিনিসপত্র কিনছে, এক বেলা ও আধপেটা খেয়ে তারা জীবনযাপন করছে। আর অন্যদিকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কী একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের মধ্যে জীবনযাপন করছি। আবারও সেই ৭২ থেকে ৭৪ আমরা শুনেছি সেই সময় বাসন্তীর কথা, দুর্গার কথা যারা শাড়ি না পেয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। যারা ভাত-রুটি না পেয়ে আম গাছের পাতা কাঁঠাল গাছের পাতা চিবিয়ে খেয়েছে তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে আজকে বাংলার প্রান্তরে প্রান্তরে। দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তার করেছে।
‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দুর্ভিক্ষ, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, দেশের মানুষ আধপেটা খেয়ে থাকে আর উন্নয়নের নামে লক্ষ-কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়। টাকা পাচার হয় কানাডা, মালয়েশিয়া ও লন্ডনে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে এখন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা বসে আছেন তাদের কোনো জবাবদিহি নেই, জবাবদিহি নেই বলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া। ১০ বছরের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। অথচ পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে যেখানে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকে, সেখানে এভাবে দাম বাড়ে না।’
‘চাল-ডাল-আটা গুঁড়ো মসলা আনাজপাতি আজকে মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আজকে বেগুন-আলু ও সবজির গায়ে হাত দিলে বিদ্যুতের মতো শক করে। ওএমএসের যে লম্বা লাইন সেখানেও মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও স্বল্প আয়ের প্রত্যেক মানুষ সেখানে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে’- বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী দুই দিন আগে বলেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বিএনপির অন্যায়-অবিচার একই বিষয়। আমি আইনমন্ত্রীকে বলছি, আপনি আপনার প্রধানমন্ত্রীকে বলুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী ও কত প্রকার? এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছেন, তত্ত্বাবধায়কের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি কী পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।’
এসময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।