আমরা দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই: ডা. জাফরুল্লাহ

আপডেট: জুন ২, ২০২১
0

বঙ্গবন্ধুকে যদি আমরা শ্রদ্ধা করি আজকে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ।
আজ ২ রা জুন বুধবার, বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে ৮৭ পুরানো পল্টন, ইকোনমিক
রিপোর্টাস ফোরাম হল, পল্টন টাওয়ারে ” সুশাসনে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ পিপলস্ পার্টির – বিপিপি‘র সভাপতি বাবুল সরদার চাখারীর
সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রর
প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী,বিশেষ অতিথি সাবেক ধর্ম মন্ত্রী নাজিম আল আজাদ, বক্তব্য রাখেন,বিপিপি‘র মহাসচিব এ আর জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনজুরুল হক সিকদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান
লিটন, মোঃ আব্দুল কাদের, নাজমা আক্তার প্রমুখ।

প্রথান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “২০% এর মতো নারীর
উপস্থিতি পিপলস পার্টির জন্য একটিন ভাল খবর। আরও ভাল খবর পারতির সভাপতি
তাঁর মেয়েকে এনেছেন, স্ত্রীকে এনেছেন। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে
আমাদের বোন , মা, স্ত্রিকে এসব মিটিং এ নিয়ে আসা। আজকে নারীদেরকে
রাস্তায় বেরিয়ে না সলে গনতন্ত্র আসবে না। মেয়েদের সমান চখে না দেখলে
গণতন্ত্র আসবে না। আমাদের ধর্মের অনেক ভাল কথা আছে।

কিন্তু একটা কথার সংস্কার প্রয়োজন। মেয়ে সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে। আজকে তাই আমাদের
আন্দোলন হবে এটা সংস্কারের জন্য। আমি আল আজাহার ইউনিভার্সিটি গিয়েছে।
তাঁরা আমাকে বলেছে এর বিকল্প ব্যবস্থাও আছে। কেরানিগঞ্জে আতাউল্লাহ
সাহেবও বলেছেন বাবা জীবিত থাকতে ছেলে মেয়ের মধ্যে সমান ভাবে সম্পত্তি
ভাগ করে দিতে পারে। এটা না করাটা অনুচিত হবে, বেআইনি হবে। ফৌজদারি অপরাধ
হবে। একজন নারীই তো আমাদের শাসন করছেন। একজন জেলে আছেন। উনিও আমাদের শাসন
করেছেন ।

তিনি আরো বলেন, আজকের সভার আর একটি ভালো দিক হল কুরান তেলাওয়াত করেছেন
ইসহাক। সেখানে বলা হয়েছে জালেমের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। ডঃ
মোঃ শহিদুল্লাহ বাংলাতে নামায পড়াতেন। আজ সেই এলাকার কাউন্সিলরকে দেখে
আমার খুব ভাল লাগছে। আরও ভালো লাগছে ভাষা সৈনিক আজাদকে দেখে। তিনি
এরশাদের সময় মন্ত্রী ছিলেন। এরশাদের কিছু ভাল গুণও ছিল। তাকে শুধু
স্বৈরশাসক বললেই হবে না । তিনি কিছু শিখিয়েছেন । ভারতেরব সাথে সম্পরকের
তুলনা দিতে গিয়ে বলেছেন। মশার সাথেও তো আমাদের রক্তের সম্পর্ক আছে। ভারত
৭১ এ আমাদেরব সাহায্য করেছে। তাঁর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু কৃতজ্ঞতার
একটা হিসাব আছে। ভারত ১ম বছরেই আমাদের যে সাহায্য করেছে তাঁর মূল্য
উথিয়ে নিয়েছে। যে ত্রিশ লক্ষ শহিদের কথা বলেন তাঁরা কোথায় মারা গেছেন?
ভারতের মাটিতে। রিফিউজি ক্যাম্পে। তখনকার দিনে ডিজাস্টার ম্যানেজমেনন্ট
এত ভাল ছিল না। ভারত আমাদের জন্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ভালো
না থাকায় অনেক বেশি লোক মারা গেছে।

আজ ভারত আমাদের বন্ধু। বন্ধুর নমুনা সেখানে আমার যে মা বোন পিতা মারা
গেছে তাদের নাম পাই না, তালিকা পাই না। তা পেলেম আমি আমার গ্রামের
রাস্তায় , শহরের রাস্তায় টাঙিয়ে দিতে পারতাম। আমার দেশবাসি জানতো এরা
আমাদের জন্য আত্নত্যাগ করেছে। কিন্তু ভারত প্রতিপদে প্রতিবন্ধকা সৃষ্টি
করছ “।

ডা. জাফরুল্লাহ দু:খ করে বলেন, “বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রাণের মানুষ। প্রাণের
মানুষও মাঝে মাঝে ভুল করে। ওনার সবছেয়ে বড় ভুল হলো উনি গন্তন্ত্রকে কবর
দিয়েছেন। উনি গণতন্তের জন্য আজীবণ লড়াই করেছেন ভারতের ও সিপিবির
প্ররোচনায় ওনার হঠাত শখ হলো আজীবণ প্রেসিডেন্ত থাকার।
উনি ওনার মৃত্যুর আগের দিন আমাকে সাভার থেকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বাকশালে
যোগদানের জন্য। আমি বলেছি মুজিব ভাই, আপনি সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন
গণতন্ত্রের জন্য। এই কাজ করবেন না। আমি সত্য বলতে কখনো ভয় পাই নাই । সেই
যুগেও পাইনি, এখনো পাই না। জেল, পুলিশের অত্যাচার এসব সহ্য করেই বড়
হয়েছি। মুজিব ভাইকে আমার সত্য বলা নৈতিক দায়িত্ব ছিল। আমি পরের দিন
বিলেতে চলে গিয়েছিলাম। এয়ারপোর্টে নামা পর আমাকে ডেকে বলা হয়েছিল , Mr
Chowdhury? Your president have been killed. What Is your reaction ?
আমার চোখে পানি এসেছিল।

যারা শেখ হাসিনাকে রোল মডেল বানাচ্ছে, কওমি জননী বানাচ্ছে সবাই পালিয়ে
গিয়েছিল। অথচ আমি কখনো আওয়ামীলীগ , ছাত্রগীগ করিনি। তাদের সাথে আমার
ভাল সম্পর্ক। সিরাজুল আলম খান আমার বন্ধু মানুষ। সেদিন আমার চখে অজান্তেই
জল চলে এসছিল। আমি অনেক কষ্ট করে বলেচ্ছিলাম উনি ওনার রক্ত দিয়ে জাতির
ঋণ পরিশধ করে গেছেন।
তাই ওনাকে (বঙ্গবন্ধুকে) যদি আমরা শ্রদ্ধা করি আজকে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা
করতে হবে। গণতন্ত্র মানে একদিনের ভোট না, সুশাসন।

কাল জজ সাহেব ৫৪ জন ছাত্রের জামিন দেন নি। এই জজ সাহেবের বিচার করতে হবে
রাস্তার মাঝথানে এনে। তাঁরা চাইছেন তাদেরকে ন্যাংটা করে লোকজন তাদের
গায়ে থুতু দেবে। আমাদের সৌভাগ্য ৭ দিনের মধ্যে আমরা রোজিনা ইসলামের
মুক্তি পেয়েছি। সাত দিনও লাগা উচিৎ ছিল না । এক দিনে জামিন পাওয়া উচিৎ
ছিল। ভাল লেগেছে যে আওয়ামী সাংবাদিক , বিএনপি সাংবাদিক ভাগ না হয়ে
একত্রে রাস্তায় নেমেছে। আমরাও তাই তাদের পাশে ছিলাম। সরকার ভয় পেয়েছে।
তৎক্ষণাৎ রায় দেওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অ আইন
মন্ত্রীর ওহির আশায় উনি দেরি করে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু ছাত্রদের জামিন
হলো না। তাদের অপরাধ তাঁরা মোদিকে গালি দিয়েছে। মোদী গালিরই যোগ্য। সে
ঘৃণ্য কসাই। কসাইকে কসাই বলা কি অপরাধ ? মোদির কারোনে ভারত ছিন্ন
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সে এসেছিল হাসিনার সমর্থন নিয়ে পশ্চিম বঙ্গ দখল
করতে। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের মানুষ সচেতন।তাঁরা মমতা ব্যানারজিকে সমর্থন
দিয়েছে। মমতা ইসলামের ধর্মকে কখনো ছোট করার চেষ্টা করে নাই।

আমরা দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নিরবাচন চাই। শুধু নির্বাচন না। চাই একটি
কল্যাণকর রাষ্ট্র।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র একটি ছোট সংস্থা। আমারা রিক্সা, ও ভ্যান , ফেরিওয়ালা, ফুটপাতের ছোট দোকানদারের
জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। মাত্র ২০০ টাকা দিয়ে তাঁর পুরো পরিবার সকল চিকিৎসা পাবে। সাথে তাদের জন্য একটি কল্যাণ সমিতি করতে চাচ্ছি। রিযা যে চালায় সেই রক্সার মালিক হবে। এতে করে তাঁর আরথিক
উন্নয়ন হবে। তাঁর সন্তান টা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরতে পারবে”।