আরমানিটোলা অগ্নিকান্ডে নিরাপত্তাকর্মী’সহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের উদ্বেগ

আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২১
0

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশনের কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকান্ডে নিরাপত্তাকর্মীসহ পাঁচজনের মৃত্যু এবং ২২ জন আহত হওয়ার ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম-এসএনএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, আরমানিটোলার ৯/১১ নম্বর আর্মানিয়ান স্ট্রিট হোল্ডিংয়ের হাজী মুসা ম্যানশন নামে ভবনটির নিচতলায় ছিল রাসায়নিক দ্রব্যের দোকান ও গুদাম। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল, ২০২১) ভোর রাতে রাসায়নিক দ্রব্যে আগুন লাগায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের বাসিন্দারা দাউ দাউ আগুনের পাশাপাশি তীব্র ধোঁয়া ও রাসায়নিকের ঝাঁজের কারণে ভেতরে আটকা পড়েন। এ ঘটনায় আজ পর্যন্ত (২৫ এপ্রিল, ২০২১) নিরাপত্তাকর্মী’সহ পাঁচজন নিহত এবং ২২ জন আহত হন। গুরুতর আহতরা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরায় রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুনে ১২৪ জন মানুষ পুড়ে অঙ্গার হন। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারায় ৭১ জন। ওইসব ঘটনায় গঠিত একাধিক তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশ দিলেও পুরান ঢাকা থেকে সরেনি অবৈধ রাসায়নিকের গুদাম।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম লক্ষ্য করেছে, চূড়িহাট্টির অগ্নিকান্ডের পর সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পুরান ঢাকা থেকে এসব রাসায়নিক গুদাম সরানোর জন্য বেশ তোড়জোড় শুরু হলেও তা কিছুদিন পর স্তিমিত হয়ে পড়ে। ঢাকার আবাসিক ভবনগুলো থেকে রাসায়সিক দ্রব্যাদি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য উচ্চ আদালত নির্দেশনা প্রদান করলেও আরমানিটোলার ঘটনা প্রমাণ করে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের দোকান ও গুদাম সরানোর কোনো অগ্রগতিই ঘটেনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে আবাসিক ভবন থেকে রাসায়নিক দ্রব্যাদি না সরানোয় এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলেছে বলে ফোরাম মনে করছে।

ফোরাম উপরোক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, নিহত ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। একইসাথে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং বিভিন্ন তদন্ত কমিটির সুপারিশ মোতাবেক আবাসিক ভবন থেকে রাসায়নিকের দোকান, গুদাম ও কারখানা আধুনিক নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা সম্বলিত স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে।