এবার বড় ধরনের আন্দোলনে যাওয়ার সুর বিএনপির

আপডেট: জুন ১২, ২০২১
0

চলতি বছর বেশ জোরেশোরেই রাজপথে নামার একটি পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। দলটির শীর্ষ স্থানীয় নেতারাও সেই পরিকল্পনার অংশের সাথে তাল মিলিয়ে সভা-সমাবেশে বলেছেন, ‘এ বছরই সরকারের বিদায়ঘণ্টা বাজবে।’

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাম্প্রতিক বক্তব্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা মূলত নতুন করে আবারো আন্দোলনে নামার উপর জোর দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদেরও দলটির তরফ থেকে সেই পথে ঐক্যবদ্ধ করার আহবান জানানো হচ্ছে বারবার। তাহলে বিএনপির আন্দোলনে নামার সেই ক্ষণটি কখন?

কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে সেই পরিকল্পনা খুব একটা পাখা মেলেনি। গত বছরের মতো এ বছরও স্বাস্থ্যবিধিরি বাধ্যতামূলক বেড়াজালেই চলছে দলটির রাজনৈতিক কর্মসূচি। তবে ভার্চুয়াল কিংবা অডিটোরিয়াম-নির্ভর সাম্প্রতিক সভাগুলোতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন নেতারা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সর্বশেষ যে তিনটি সভায় বক্তব্য রেখেছেন, তাতে তিনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে নামার বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার করেই বলেছেন।

গত ৭ জুন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব রাজপথে ‘গণ-অভ্যুত্থান’ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একটি নিরপেক্ষ সরকার ও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। এই কাজটি আমাদের করতে হবে, অন্য কেউ করে দিয়ে যাবে না। আমেরিকানরা করে দিয়ে যাবে না, চীন করে দিয়ে যাবে না, ভারত করে দিয়ে যাবে না। বাংলাদেশের মানুষকে এটা করতে হবে এবং এর নেতৃত্ব অবশ্যই বিএনপিকে দিতে হবে।’

৯ জুন জিয়া স্মৃতি পাঠাগার ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থার একটি অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের সংগঠিত হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। একটা যুদ্ধ যখন করতে হবে, সেই যুদ্ধে পুরোপুরিভাবে ইকুইপ্ট হতে হবে। যুদ্ধ করতেই হবে।’

১০ জুন মহানগর বিএনপির একটি সভায় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের জন্য দলকে ‘সর্বাত্মক’ প্রস্তুতি নিতে বলেন বিএনপি মহাসচিব। এই অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য নিয়েও নেতাকর্মীরা আলোচনা করছেন। গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীরা জেলখানায়, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বন্দিবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশের মাটিতে। এমনি অবস্থায় আমরা ভার্চুয়ালি ও এমন সব আলোচনার মধ্য দিয়ে কথাই বলে যাচ্ছি।

আমার মনে হয় কথায় কাজ হবে না। এখন কথা বলার চেয়ে বেশি জরুরি সরকারকে পতন কিভাবে করাবো। সেই পতনের ডাক দেন, সেই আন্দোলনের ডাক দেন। অতীতের ইতিহাসে আমরা থেকেছি, আগামীর ইতিহাসেও আমরা থাকবো। আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করবো।’

নয়াদিগন্ত