কাশিমপুর কারাগার থেকে রোজিনা ইসলামের মুক্তি

আপডেট: মে ২৩, ২০২১
0

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনের মামলায় গ্রেফতারকৃত প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গ্রেফতারের ৬দিন পর রবিবার বিকেলে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথি জানান, সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনের মামলায় গ্রেফতারকৃত সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গত ১৮ মে বিকেলে এ কারাগারে আনা হয়। রবিবার ভার্চুয়াল আদালতে শুনানী শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তার অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশ বিকেলে এ কারাগারে পৌছে। পরে তা যাচাই বাছাই শেষে বিকেল ৪টা ২০মিনিটের দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান রোজিনা ইসলাম।

এদিকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুরের খবর পেয়ে তার ভাই সেলিম, দেবর জহিরুল ইসলাম আদলু, বোন জুলি ও লিনা, ভগ্নিপতি জাহিদ পারভেজ ও বাহালুর জাকারিয়া প্রিন্সসহ আত্মীয় স্বজন, বন্ধু ও বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের আরপি গেইটে (প্রধান গেইট) ভীড় জমান। বিকেল তিনটার দিকে দুইটি মাইক্রোবাস নিয়ে ১২/১৩জন স্বজন ও বন্ধু প্রধান গেইট দিয়ে কারাগারের সামনে যান এবং মুক্তিপ্রাপ্ত রোজিনাকে গ্রহণ করেন। কারাগার থেকে বের হয়ে রোজিনা ইসলাম স্বজনদের সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশ্যে কাশিমপুর কারাগার ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

প্রসঙ্গতঃ গত ১৭ মে (সোমবার) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। অনুমতি না নিয়ে স্বাস্থ‌্য সচিবের পিএস সাইফুল ইসলামের রুমে ফাইল থেকে নথি লুকিয়ে নেওয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ছবি তোলার অভিযোগে তাকে ওই রুমে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রায় সাড়ে ৫ঘন্টা পর তাকে পুলিশে হেফাজতে দেওয়া হয়। পরে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর তাকে পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়।

রাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ উসমানী বাদি হয়ে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরদিন তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতে হাজির করে পুলিশ হেফজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানালে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম ওই আবেদন নামঞ্জুর করে রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে গ্রেফতারকৃত রোজিনা ইসলামকে ওইদিন (মঙ্গলবার) বিকেল ৩ টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর গত ২০ মে ধার্যকৃত দিনে তার জামিন শুনানি হয়। তবে ওইদিন বিচারক কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে রবিবার আদেশের দিন ধার্য করেন। রবিবার ভার্চুয়াল আদালতে শুনানী শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তার অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। আগামী ১৫ জুলাই মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ওইদিনই এ মামলায় পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে