কোরবানী পশুর চামড়া কিনতে ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে

আপডেট: জুলাই ৯, ২০২১
0

কোরবানী পশুর চামড়া কিনতে ব্যবসায়ীদের ৫৮৩ কোটি টাকার তহবিলের জোগান দেয়ার জন্য বরাদ্দ রেখেছে চার রাষ্ট্রায়ত্তসহ ৯ বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রেখেছে রূপালী ব্যাংক ২২৭ কোটি টাকা। এরপর জনতা ব্যাংক ১৪০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ১২০ কোটি টাকা এবং সোনালী ব্যাংক ২৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে চামড়া কিনতে বেশি রেখেছে ইসলামী ব্যাংক ৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ব্যাংকগুলোতে পৃথক পৃথক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চামড়া খাতে এমনিতেই চলছে মন্দা। যে কারণে ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। এর প্রভাবে ব্যবসায়ীরা আগের মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। এতে বেড়ে যাচ্ছে খেলাপি ঋণ।

তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কিনতে ব্যবসায়ীদের তহবিলের জোগান দেয়ার বরাদ্দ রাখা হলেও ঋণ নিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। গত বছর ঈদুল আজহার আগে ৫ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এ খাতে বরাদ্দ রেখেছিল ৬৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়েছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকা।

জানা গেছে, প্রতি বছরই ব্যাংকগুলো চামড়া কেনার জন্য ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে থাকে। গত বছর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য ৯টি ব্যাংক যে পরিমাণ বরাদ্দ রেখেছিল তার সামান্যই ঋণ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তহবিলের সঙ্কটে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চামড়া কিনতে পারেনি। এর ফলে পানির দামে চামড়া বিক্রি করে এর সুবিধাভোগীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, গত বছর অগ্রণী ব্যাংক ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। কিন্তু বিপরীতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এবারও ব্যাংকটি এ খাতে ঋণ দিতে ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। রূপালী ব্যাংক গত বছর চামড়া খাতে ঋণ দেয়ার জন্য ১৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। কিন্তু ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এবারও ব্যাংকটি এ খাতে ঋণ দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেখেছে ২২৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, জনতা ব্যাংক গত বছর ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। কিন্তু কোনো ঋণই বিতরণ করা হয়নি। এবারও ব্যাংকটি ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে এ খাতে ঋণ দেয়ার জন্য। সোনালী ব্যাংক গত বছর ৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল এ খাতে ঋণ দেয়ার জন্য। কিন্তু ব্যাংকটি ঋণ বিতরণ করেছিল ২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এবার ব্যাংকটি এ খাতে ঋণ দিতে বরাদ্দ রেখেছে ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বেসিক ব্যাংক তিন কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেও গত বছর এক টাকাও ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। এবার ব্যাংকটি চামড়া কিনতে কোনো অর্থই বরাদ্দ রাখেনি।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক গত বছর ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিল। এবারো ব্যাংকটি কাঁচা চামড়া কিনতে ৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা রাদ্দ রেখেছে। আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক গত বছর ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ঋণ দিয়েছিল মাত্র ১ কোটি টাকা। এবার ব্যাংকটি বরাদ্দ রেখেছে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা।