খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত না করে কঠোর লকডাউন দেয়ায় দিন আনে দিন খাওয়া মানুষগুলো দিশেহারা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা মোকাবেলায় রোডম্যাপহীন বাংলাদেশ:পরিকল্পনাহীন লকডাউনে বিপর্যস্ত ‘দিন আনে দিন খায়’ শ্রেণীর কর্মহীন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চিত্র তুলে ধরে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত না করেই দেশব্যাপী ‘কঠোর লকডাউন’ চাপিয়ে দেওয়ার সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্তে বিশেষ করে দিন আনে দিন খায়- এ শ্রেণির মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নগদ অর্থ সহযোগিতা কিংবা খাদ্য সহায়তা ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষকে ঘরে আটকে রাখা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
বাংলাদেশে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে টানা লকডাউনের নামে সাধারণ ছুটি এবং এ বছরের ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর করা লকডাউনে কোটি কোটি কর্মহীন মানুষ খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে গত ১ জুলাই থেকে প্রথমে ৭ দিন এবং পরবর্তীতে আরও ৭ দিন সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ। কিন্তু শিল্প কল-কারখানা খোলা। সরকার কঠোর অবস্থানে যাওয়ায় দিনমজুর ও খেটে খাওয়া নিম্ম আয়ের মানুষ মহাসংকটের সম্মুখীন হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উঠে আসে গত ০৪ জুলাই ২০২১ তারিখে দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার বাংলা সংস্করণে প্রকাশিত একটি সংবাদ হেডলাইনে ‘যদি কিছু টাকা পাওয়া যায়, আরেকটা দিন খেতে পারব’।
সংবাদে ষাটোর্ধ্বো মোঃ নাজিম উদ্দিন, পেশায় পোশাক বিক্রেতার বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি তুলে ধরা হয়েছে। লকডাউনের আগে তিনি পাঁচ কেজি আটা কিনেছিলেন। তিন দিনে দুই কেজি শেষ। তিন কেজি আর কতদিন চলবে, সেই দুশ্চিন্তায় বাধ্য হয়েই লকডাঊনের মাঝেই কিছু মাস্ক বিক্রয় বসেছেন। “যদি কিছু টাকা পাওয়া যায়, তাহলে আরেকটা দিন কিছু খেতে পারবেন”। এই নাজিম উদ্দিন আজ সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের শিকার এদেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের প্রতিচ্ছবি।