‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার সম্পূর্ণ দায় সরকারকে নিতে হবে’

আপডেট: জুলাই ৫, ২০২১
0

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘অনভিপ্রেত ও রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে গতকাল সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘গতকাল(বৃহস্পতিবার) সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়। সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনীর মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগনের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন।”

‘‘ এই ধরনের বক্তব্য সংসদ নেতার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। এটা সমস্ত জাতিকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, সংসদ নেতার এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করেছে।”

উত্তরার বাসা থেকে জুম নেটওয়ার্কে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলন গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরা হয়।

সংসদে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সংসদে দেশনেত্রী বিদেশে চিকিতসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ঔদ্বত্যপূর্ণ শালীনতা বিবর্জিত বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। সভা মনে করে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সাংবিধানিক এব্ং প্রচলিত আইনের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের আপোষহীন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তার পাপ্য জামিন পর্যন্ত তাকে দেয়া হয়নি। অথচ একই ধরনের মামলাঢ অন্যান্য প্রায় সকল অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হয়েছে।”

‘‘ দেশনেত্রীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও একথা বলা হয়নি যে, সরকার তাকে চিকিতসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না। যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী অথবা আজীবন মৃত্যুদন্নড প্রাপ্ত আসামী মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে সেখানে এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রেরর জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগনের ভোটে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত তিন বার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন তাকে মানবিক কারনে চিকিতসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিতসা কেন্দ্রে চিকিতসার সুযোগ দেওয়া যাবে না-এটা কোনো মতেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ সরকারের যে নির্দেশ এবং যে আইনের বলে তারা নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশে আবার তাকে নতুন নির্দেশে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকার পারেন। আসলে তারা(সরকার) নিজেদের ক্ষমতা নিজেরাই খর্ব করছে।এর একমাত্র উদ্দেশ্যে যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটা বৈরী মনোভাব প্রদর্শন করা এবং দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে এই ব্যবস্থাটা তারা করেছেন।”

‘‘ স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে যে, সরকার নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আজীবন সংগ্রামী বাংলাদেশের জনগনে প্রিয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিতসা কেন্দ্রে সকল ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহন করবেন।”