গণতন্ত্রহীন দেশ ও করোনা সংকটে এবারের নববর্ষেও আমরা বিমর্ষ ও বেদনার্ত- মীর্জা ফখরুল

আপডেট: এপ্রিল ১৪, ২০২১
0

একদিকে গণতন্ত্র ও অধিকারহীন পরিবেশ, অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ জাতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ফেলে আসা বছরের দূর্যোগ, দুর্বিপাক কাটিয়ে আমরা নতুন বছরে এগিয়ে যাওয়ার সোনালী সম্ভাবনা দেখতে পাবো বলে বিশ্বাস করি বলে মন্তব্য করেছেন মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নববর্ষ উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন। মীর্জা ফখরুলের বাণীটি হুবুহু তুলে ধরা হলেঅ দেশ জনতা ডটকমের পাঠকদের জন্য।

”আজ পহেলা বৈশাখ ১৪২৮। বাংলা সনের প্রথম দিন। নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আমাদের অগণিত সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের এক উজ্জল আনন্দময় উৎসব। এই উৎসব সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। পহেলা বৈশাখ থেকেই শুরু হয় নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার আকুলতা।

নতুন বছর মানেই অতীতের সকল ব্যর্থতা, জ্বরাজীর্ণতা পেছনে ফেলে নতুন উদ্দীপনা ও উৎসাহে সুন্দর সমৃদ্ধ আগামী বিনির্মাণে এগিয়ে যাওয়া।
নানা দুর্যোগ-দুর্বিপাকের মধ্য দিয়ে আমাদের পালন করতে হচ্ছে ১লা বৈশাখ। একদিকে গণতন্ত্র ও অধিকারহীন পরিবেশ, অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ জাতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ফেলে আসা বছরের দূর্যোগ, দুর্বিপাক কাটিয়ে আমরা নতুন বছরে এগিয়ে যাওয়ার সোনালী সম্ভাবনা দেখতে পাবো বলে বিশ্বাস করি।

বর্তমান দু:সময়, মহামারী ও নৈরাজ্যের অভিঘাত সত্ত্বেও আমাদের শান্তি, স্বস্তি, সুস্থতা ও সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে হবে। বিচ্ছেদ ও বিভাজন দুর করে ১লা বৈশাখ ভরে উঠুক পারস্পরিক শুভেচ্ছায়। তবে এবারের নববর্ষের উৎসবে আমরা বিমর্ষ ও বেদনার্ত। সারা দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জনজীবনে যে বিয়োগান্তক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই। দেশে দেশে করোনার আক্রমণে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানী ঘটছে, আক্রান্ত হচ্ছেন অগণিত মানুষ। করোনা মোকাবেলা এবং সংক্রমণ রোধে সরকারের অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন পদক্ষেপে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিপাকে পড়েছে নিম্ম আয় ও দিন আনে দিন খায় এমন মানুষ। তাই এবারের বাংলা নববর্ষের উৎসব ঐতিহ্যের ধারা বেয়ে পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের মানুষদের অনুরোধ করবো-করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে, সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ১লা বৈশাখেও সকলে যেন ঘরে ঘরে অবস্থান করেন। আমি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি-তারা এই সংকটকালে অসহায় গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ান।

প্রতিটি উৎসবের অন্ত:স্থলে থাকে কোমলতা, শ্রদ্ধা, সংকীর্ণহীনতা এবং হীনমন্যতা থেকে মুক্তির মন্ত্র-করোনাভাইরাসের এই আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য খোলা মনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সেটি মোকাবেলা করতে হবে। ১৪২৮ বাংলা সনের প্রথম দিনের নতুন আলোতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট কায়মনোবাক্যে দেশের সকল মানুষের সুখ ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।

বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফিরাত, শান্তি ও আক্রান্তদের সুস্থতা কামনা করছি । নববর্ষের এই নতুন সকালে মহান আল্লাহর কাছে সকলের ব্যক্তিগত, পারিবারিক তথা জাতীয় সকল পর্যায়ে সুখ ও শান্তি কামনা করি। ১৪২৮ সালে করোনামুক্ত স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসুক, জাতি ফিরে পাক গণতন্ত্র ও জনঅধিকার, এই কামনা করি।১৪২৮ বাংলা সনের নতুন প্রভাতের প্রথম আলোতে আমি দেশবাসীকে আবারও জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।