গোলাপগঞ্জে সাড়া ফেলেছে সজিব আলির কীটনাশকমুক্ত আম বাগান

আপডেট: জুন ২০, ২০২১
0

আজিজ খান, গোলাপগঞ্জ(সিলেট) থেকে: সারি সারি গাছ। বাগানের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে গাছের ডালে ডালে ঝুলে আছে অসংখ্য আম। হিমসাগর, লেংড়া, হাঁড়িভাঙা, আ¤্রপালি, আশনি, ম্যাঙ্গাথাই ও ফজলীসহ দেশীয় ছোট-বড় নানাজাতের সুস্বাদু আমের ভারে নুয়ে পড়ছে গাছ। ছোট-বড় মিলে পুরো বাগানেই আমের ছড়াছড়ি। বাগানে গেলে মন ভরে যাবে পাকা আমের ঘ্রাণে। এ রকমই চিত্র গোলাপগঞ্জ উপজেলার শীলঘাট গ্রামের বটতলার সজিব আলীর আমবাগানে। তার ছোট একটি বাগান থেকে এখন বিশাল আমবাগানে পরিণত হয়েছে। শুরুতে ১৫০টি গাছ নিয়ে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে রয়েছে তার আমবাগান। তার বাগানে আবাদ হচ্ছে আ¤্রপালি, হিম সাগর, হাড়ি ভাঙ্গা, আশনি, ল্যাংড়া, ম্যাঙ্গাথাই ও ফজলীসহ এ কয়েক জাতের প্রায় আড়াই লাখ টাকার সুস্বাদু আম। এবার বাড়ছে সজিব আলীর বাগানে বারোমাসি আমের আরো ৭০টি আম গাছের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে জমির পরিমাণ। তিনি এখন সফল একজন আম চাষি।

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম শীলঘাটের বটতলা। উপজেলা থেকে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান। লন্ডন প্রবাসী সজিব আলী সাহেব ২০১১ সালে দেশে আসার পর সতেজ আম খাওয়ার মনোভাব থেকে শখের বশত: গড়ে তোলেন তার এ আম বাগান। তার ছেলে সিদ্দিক ৫/৬ জন শ্রমিক নিয়ে নিয়মিত পরিচর্যাসহ তার বাগানের তদারকি করেন।

সজিব আলী সাহেবের ছেলে সিদ্দিক বলেন, ‘বিষ এবং ফরমালিনমুক্ত আম বাজারে পাওয়া কঠিন। সে চিন্তা থেকে বাগানটি করা হয়েছে। মামা আব্দুল করিমের সহযোগিতায় আমবাগানের পরিধি বাড়াতে সাহস পেয়েছি। প্রথম অবস্থায় আমার পিতা শখ করে ৩ বিঘা জমিতে আমবাগান করেন। পরে অল্প খরচ ও সামান্য পরিশ্রমে বেশি লাভ দেখে আরোও ৩ বিঘা জমি নিয়ে নিয়ে বারোমাসি আম বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখন আমরা বাণিজ্যিকভাবে আম চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। আগামীতে আম গাছের সংখ্যা ও জমির পরিমাণ বাড়ানোর ইচ্ছে রয়েছে।

ব্যাংকার রুহেল আহমদ বলেন, সজিব আলি ভাইয়ের আমের বাগানের মাধ্যমে আমরা ফরমালিনমুক্ত সু-স্বাদু আম খেতে পারছি। তাদের বাগানের মিষ্টি ও সুস্বাদু বিভিন্ন প্রজাতির রসালো আম ক্রয় করতে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ ভিড় করছেন। বেশিরভাগ আমই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বাগান থেকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, শীলঘাট বটতলার সজিব আলীর বাগানে এবার প্রচুর আম ধরেছে। তাঁকে আমরা নানাভাবে পরামর্শ দিয়েছি। বাগানটি এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আমবাগান এখন। ব্যক্তি পর্যায়ে এ রকম আরো বাগান হলে স্থানীয় বাজারগুলোতে আমের চাহিদা মেটানো সম্ভব।’

তিনি আরোও বলেন, আমাদের তত্বাবধানে উপজেলায় ৬০ টি আ¤্রপালি বাগান রয়েছে। আম চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগীতাও করা হচ্ছে। সেই সাথে আধুনিক কৌশল প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কবির বলেন, সজিব আলি সাহেব এতো সুন্দর আম বাগান করে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আমি শুনেছি তার বাগানে কোন প্রকার ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। এমন সুন্দর বাগান এ অঞ্চলে ফল উৎপাদনে অনেককেই উৎসাহিত করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’