মো. সিরাজুল ইসলাম চরফ্যাশন(ভোলা)
চরফ্যাশন চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ২১টি ইউনিয়নে আবাদ হয়েছে এ বছর তরমুজ ১২হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় অথবা তেমন শিলা বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠে তরমুজের অবস্থা বেশ ভালো রয়েছে। জমিতে শোভা পাচ্ছে সবুজ দৃষ্টিনন্দন তরমুজ। ইতিপুর্বে তরমুজ তোলা শুরু হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তবে অবশ্যই এ অঞ্চলে তরমুজের বাম্পার ফলন কৃষক সুবিধা পাবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবু হাছনাইন বলেন, তরমুজে সাধাণত ধানের চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ লাভ বেশি হয়। এজন্য অনেক কৃষক তরমুজ আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কোন কোন কৃষক তরমুজ বিক্রিও শুরু করেছেন। প্রথম দিকে তারা বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন। পাতার ও ফলের রোগ সমাধানে কৃষি কর্মকর্তারা সব ধরনের পরামর্শ সেবা দিয়ে আসছেন কৃষকদের। যদি আর ১৫ থেকে ২০ দিন আবাহওয়া সহায় থাকে তবে তরমুজ বিক্রিতে কোন সমস্যা হবেনা।এ বছর তরমুজ ১২হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঠাকুর কৃষ্ণ দাস জানান, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এখানে তরমুজ আবাদ শুরু করা হয়। অনেকে তারও আগে আগাম আবাদ করেছে। মূলত তরমুজ ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলেন কৃষকরা। বর্তমানে আগাম আবাদ করা তরমুজ বাজারে রয়েছে। এছাড়া অন্যগুলোরও কর্তনের প্রস্ততি চলছে। কেউ কেউ আবার বাজারেও তুলেছেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান শিপন বলেন, আমার এলাকায় সাধারণত বন্টিক বেরি, সুপার এমপিআর, পাকিজা, বল্লাক ডায়মন্ড, ট্রাফিক্যল ড্রাগন, সুইট জায়েন্ট, ড্রাগন, সুলতান, আনার কলি, বিগ ফ্যামিলি জাতের তরমুজ আবাদ বেশি করা হয়। পাশাপাশি এবারই নতুন উন্নত জাত হানি কুইন ও লেন ফাই জাতের আবাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, হলুদ রঙ্গা এ তরমুজ অত্যন্ত সু-মিষ্ট হওয়ায় কেজি হিসেবে এ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। একেকটি তরমুজ ৭ থেকে ৮ কেজি ওজনের হয়। প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে কর্তমানে বিক্রি হচ্ছে।
নুরাবাদের আহম্মদপুর গ্রামের তরমুজ চাষি আবুল কালাম জানান, গত বছর মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তরমুজের ফলন আশানুরূপ হয়নি। ফলে অনেক কৃষককে গুনতে হয়েছে লোকসান। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে। তাই আশা করা যাচ্ছে লোকসান পুষিয়ে লাভবান হবেন কৃষকরা।
উপজেলা সদরের মজিব নগর ইউনিয়নের চরমোতাহার গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন জানান, তারা প্রায় দেড় একর জমিতে এবছর তরমুজের আবাদ করেছেন। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তাদের সব ধরনের সেবা দিয়ে আসছেন। বাজারে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়েছে।
চরফ্যাশন কৃষি অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা আবু হাছনাইন বলেন, অতি বৃষ্টির চেয়ে তরমুজের বেশি ক্ষতি হয় শিলা বৃষ্টিতে। তাই শিলা বৃষ্টিতে তরমুজের ক্ষেতের উপর পলিথিন দিয়ে ডেকে রাখা পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া অতি বৃষ্টিতে পানি জমে যাতে গাছের গোড়া পচঁতে না পাড়ে সে জন্য বিশেষ স্প্রের কথা বলেন চরফ্যাশন কৃষি বিভাগের প্রধান এই কর্মকর্তা।
সোমবার দুপুরে তরমুজ বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, আমরা বর্তমানে ৭০/৮০টাকা কেজি তরমুজ বিক্রি করছি। এতে একটি তরমুজ বড় সাইজ ৮/৯ কেজি হয়। এতে বিক্রি নামে সাড়ে ৬শ থেকে ৯টাকার মত। এই বছর সর্বোচ্চ তরমুজ চাষ হয়েছে বিছিন্ন দ্বীপ মজিব নগর ইউনিয়নে।
ক্যাপশনঃ চরফ্যাশনে তরমুজের বাম্পার ফলনে বাজারে দেখা যাচ্ছে তরমুজ।
মো. সিরাজুল ইসলাম
চরফ্যাশন(ভোলা)প্রতিনিধি
০১৭১০৮৪৬২৯৮