ছাতকে খছরু হত্যা মামলায় একাধিক নিরপরাধ আসামি

আপডেট: অক্টোবর ১৪, ২০২১
0

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে খছরু মিয়া (৪৯) হত্যাকান্ডের ঘটনায় একাধিক নিরপরাধিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানায় দায়ের করা এজহারের সাথে বাদী কতর্ৃক একটি অনলাইন পেইজের জনৈক ব্যক্তির সাথে স্বাক্ষাতকারের অনেকটা মিল নেই। স্বাক্ষাতকারে যেসব অপরাধিদের নাম উল্লেখ করেছেন তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তিরা এজহারে পাওয়া যায় না। আবার যাদের নাম ওই স্বাক্ষাতকারে উল্লেখ করেননি এমন কিছু নিরপরাধিদের করা হয়েছে আসামি। যে কারণে নিরপরাধিরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

জানা যায়, উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের জহিরপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার নুর মিয়া, রাজা মিয়ার জমি প্রায় চার বছর ধরে দেখাশুনাসহ বর্গাচাষ করে আসছিলেন পাশের বাড়ির মৃত আলফত আলীর পুত্র মজু মিয়া । এতে গায়ে জ্বলতো জমির মালিকের চাচাত ভাই একই বাড়ির মৃত আলতাব আলীর পুত্র খছরু মিয়ার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর নুর মিয়াদের ওই জমিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মারামারির সময় খুন হন খছরু মিয়া।

এ ঘটনায় গ্রামের মৃত আলফত আলীর পুত্র মজু মিয়াকে প্রধান আসামি করে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৩১) দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী বিনা বেগম। ঘটনার পরদিন সকালে আসামি আবুল হোসেনের স্ত্রী লিনা ও শফিকুন নুর পুলিশের হাতে আটক হন। ক’দিন কারভোগের পর লিনা জামিনে বেরিয়ে আসলেও শফিকুননুর এখনো জেল হাজতে আছেন।

সরজমিন ঘুরে জানা যায়, জমিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করেই প্রতিপক্ষের হামলায় খছরু মিয়া মারা যান। পুত্র শোকে কাতর নিহতের মা জয়ধুন বিবি (৯০)। তিনি জানান, প্রায় পাঁচ মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার বড় ছেলে গয়াছ মিয়া মারা গেছে। সেই শোক সইতে না সইতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে জামাতা ফয়জুর রহমানের নির্দেশে তার তৃতীয় পুত্র খছরু মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। পুত্র হত্যাকারীদের তিনি ফাঁসি দেখে মরতে চান। নিহতের চাচাতো ভাই শিপন মিয়া বলেন, শিশুদের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মজু মিয়াগংরা খছরু মিয়াকে খুন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোকজনরা জানান, প্রকৃত পক্ষে যারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। কিন্তু ঘটনার সাথে যারা জড়িত নয় এমন কিছু নিরপরাধি ব্যক্তিদের জড়ানো হয়েছে।

থানায় মামলা দায়েরের পূর্বে ‘বাংলা টু লন্ডন’ নামক ফেসবুকের একটি পেইজে জনৈক ব্যক্তির কাছে লাইভে নিহতের স্ত্রী ও মামলার বাদি বিনা বেগম যে বর্ণনা দিয়েছিলেন সেখানে আবুল বশর, আবদুল কুদ্দুছ ও আবদুল হামিদের নাম ছিলনা। অথচ ওই মামলায় তাদেরকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, মামলার এজহারভূক্ত দুই আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাজিম উদ্দিন বলেন, খছরু মিয়া হত্যা মামলাটি তদন্তাধিন। জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।