গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে লুটেরাদের স্বার্থে জনগণের পকেট কেটে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে কাওরান বাজারে টিসিবি ভবনের সামনে বিইআরসি-র গণশুনানি কেন্দ্রে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য, তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, ইমরাদ জুলকারনাইন ইমন, দীপক রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
অবস্থান কর্মসূচিতে জোনায়েদ সাকি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তারা এখন প্রকাশ্যে তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে দায় চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর। এতে বোঝা যায় সরকার আসলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। বরং তারা নিজেরাই সিন্ডিকেট তৈরি করে জনগণের পকেট কেটে দিনে দুপুরে লুটপাট চালাচ্ছে এবং লুটের পরিধি বাড়ানোর জন্য নতুন করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির আয়োজন করছে। আগামী ২১ থেকে ২৪ মার্চ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য গণশুনানির তারিখ ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে গণশুনানিতে বিইআরসি-র গণশুনানিতে মূল্য বাড়ানোর পক্ষে তারা কোন যুক্তি তুলে ধরতে পারেনি। বরং মূল্য কমানোর যুক্তি পাওয়া গেছে ভোক্তাদের তরফ থেকে। অথচ এই কমিশন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে এসে প্রহসনের গণশুনানির আয়োজন করে থাকে।
অবস্থান কর্মসূচিতে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের স্থলভাগে এবং সমুদ্রের তলদেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ রয়েছে। গত ১৩ বছরে উৎপাদন বৃদ্ধি, গ্যাস উত্তোলনে দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রেও দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বেশি দামি এলএনজি আমদানির মাধ্যমে অর্থনীতিকে ব্যয়বহুল করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। খোলা বাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে শতকরা ৫ ভাগের দামে দেশের গ্যাস ও আমদানিকৃত সকল গ্যাসের মূল্য একসাথে ১১৭ ভাগ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। সরকারের ব্যর্থতা ও দূর্নীতির দায় জনগণের ঘারে চাপিয়ে দিতেই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে।
তিনি আরো বলেন, সয়াবিন তেল, চাল-ডাল-পেয়জসহ নিত্যপণ্যের অসনীয় মূল্যবৃদ্ধির ফলে এমনিতেই মানুষের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। আবার নতুন করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির করা হলে পরিবহণ ও ঘরভাড়া বৃদ্ধি পাবে। মানুষের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যদি কোন যৌক্তিক কারণ থেকেও থাকে তবুও এই মূহুর্তে তা বৃদ্ধি করে মানুষের ওপর নতুন বোঝা চাপানো কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা রোধে আগামী ২৮ মার্চ সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। এ অর্ধদিবস হরতাল সফল করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন এ হরতাল সফল করার ভেতর দিয়েই এ সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করতে করতে হবে এবং আরো লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে এ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।