না’গঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চ ডুবি ২৭ জনের লাশ উদ্ধার

আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চটি উদ্ধার উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া প্রায় ১৮ ঘন্টা পর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় নদীর তলদেশ থেকে টেনে লঞ্চটি নদীর পূর্ব তীরে নিয়ে রাখে। সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুর সোয়া বারোটার দিকে যখন লঞ্চটি উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসা হয় তখন ভেতরে কেবল লাশের স্তুুপ দেখা যায়।

\
ইতিমধ্যে লঞ্চের ভেতর থেকে শিশু, নারী ও পুরুষের ২২ টি লাশ উদ্ধার করা হয়। আর কোন লাশ না পাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষনা করা হয়। এর আগে রোববার ডুবে যাওয়ার ৬ ঘন্টার মধ্যে রাত ১২ টার দিকে ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।

রবিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকায় একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চে প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে। লঞ্চ ডুবির পরপরই ২৯ জন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়। ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে রাত থেকে বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, দমকল বাহিনী, নৌ ও থানা পুলিশ কাজ করছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক জানান, লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর রাতেই উদ্ধারকর্মীরা ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন মুন্সিগঞ্জ সদরের উত্তর চরমসুরার ওয়ালিউল্লাহের স্ত্রী পাখিনা (৪৫), মুন্সিগঞ্জ সদরের প্রীতিময় শর্মার স্ত্রী প্রতিমা শর্মা (৫৩), মালপাড়ার হারাধন সাহার স্ত্রী সুনিতা সাহা (৪০) ও নোয়াগাঁও পূর্বপাড়ার দুখু মিয়ার মেয়ে ছাউদা আক্তার লতা (১৮)। রাতে উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে শুধুমাত্র একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাতেই ৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্বজনদের দাবি অনুযায়ী লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ৩২ জন নিখোঁজ ছিলেন।

এদিকে সোমবার দুপুর সোয়া বারোটার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি তীরে আনা হলে ভেতরে লাশ দেখা যায়। লঞ্চের ভেতর থেকে ২২টি লাশ উদ্ধার করা হয়। নতুন করে আর কোন লাশ না পাওয়ায় বিকেল ৪টায় উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষনা করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শহিদুল আলম জানান, চরসৈয়দপুর এলাকায় নির্মাণাধীন শীতলক্ষ্যা ৩য় সেতুর কাছাকাছি স্থানে এই লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে।

একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় এম.এল রাবিত আল হাসান নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়েছিল লঞ্চটি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শীতলক্ষ্যা নদীর উপর নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের নিরাপত্তকর্মী মোহাম্মদ হালিম জানান, এসকেএল-৩ (এম ০১২৬৪৩) নামের একটি কোস্টার জাহাজ লঞ্চটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে অন্তত ২০০ মিটার টেনে নিয়ে যায়। এরপর ধীরে ধীরে লঞ্চটি যাত্রীসহ নদীতে ডুবে যায়।