না’গঞ্জে নিহত যুবদল কর্মী শাওনের ফেসবুক জুড়ে শুধুই বিএনপি নেতাদের ছবি ও ভিডিও

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশাল র‌্যালিতে পুলিশের হামলা ও পরে সংঘর্ষে নিহত যুবদল কর্মী শাওন আহমেদ রাজা-যুবদলকর্মী ছিল কি ছিল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকেই বলার চেষ্টা করেছিলেন যে শাওন যুবদল কর্মী নন। তার পরিবারের অনেককে দিয়ে একটি পক্ষ বলানোর চেষ্টা করেছিলেন যে শাওন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। কিন্তু শাওনের ফেসবুক আইডি বলছে অন্য কথা।
শাওনের ব্যবহৃত ‘ংধড়িহ ধযসবফ (রাজা)’ নামে আইডিতে দেখা যায় আইডির প্রথমেই লেখা রয়েছে,- কর্মীর চেয়ে বড় কোন পদ নাই, সাক্ষী দেহের ঘামে ভেজা নগরীর রাজপথ,ফতুল্লা থানা যুবদল জিন্দাবাদ’।
তার আইডিতে বিএনপির সহ আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের একাধিক ছবি পোষ্ট করা। গত ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে বিএনপির সহ আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাদিকুর রহমান সাদেকের সঙ্গে খিচুরি বিতরণের ছবি শাওনের আইডিতে পোষ্ট করা দেখা গেছে। যে ছবিতে শাওনকেও এসব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা যায়।
গত ৩১ মে শাওনের ফেসবুকে দেওয়া সর্বশেষ পোস্টে বিএনপিরসহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও যুবদল নেতা সাদিকুর রহমানের একটি ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিটির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘নিশি রাতের ভোট চোরদেরকে বলে দিও ২০২৩ সালে আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল নারায়ণগঞ্জ জেলা।’
শুধু তাই নয়, তার আইডিতে যুবদলের নেতাদের ছবি দিয়ে তৈরী করা পোষ্টারও দেখা গেছে। পোষ্টারের নিচে প্রচারক হিসেবে অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে তার ছবি ও নাম দেখা গেছে। তার আইডি দেখলে যে কেউ সহজেই বুঝবে যে সে যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিল। এছাড়া কারামুক্ত যুবদল নেতা সাদিকুর রহমান সাদেককে ফুলের মালা দিয়েও বরণ করতে দেখা যায় শাওনকে।
শাওনের এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাওন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত ছিল। সে যুবদলের কমিটিতে পদ পাওয়ারও চেষ্টা করছিল।
বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল দাবি করেছিলেন, ‘নিহত শাওন যুবদল কর্মী নয়, বরং আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা।’
তবে বৃহস্পতিবার শাওন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যুবদলের মিছিলে সামনের সারিতে থাকা শাওনের ছবি দেখালে শওকত আলী ছবিটি শাওনের বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছবিতে শাওনকে দেখা যাচ্ছে। এই ছবি তো মুছে ফেলা যাবে না।’
এ সময় তিনি বলেন, কিন্তু আমি বলব, আমার সন্তান মারা গেছে। তার পরিবার যেন কোনো প্রতিহিংসার শিকার না হয়। নতুন করে এই পরিবারের লোকজন যেন ঝামেলায় না পড়ে। আমি চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। ন্যায়বিচার হোক।’
স্থানীয়ভাবে মৎস্যজীবী দলনেতা সলিমুল্লাহ হৃদয় ও যুবদল নেতা আমীর বেপারী বলেন শাওন বক্তাবলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য চেষ্টা করছিলেন। কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাদিকুর রহমানের অনুসারী ছিলেন শাওন।
গতকাল শুক্রবার সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে শাওনের বাড়িতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাওন যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিল। আমার সঙ্গে তার অসংখ্য ছবি আছে। শাওন প্রধান নাম হলেও রাজনীতিতে সে রাজা প্রধান নামে পরিচিত ছিল।