নাটকের সংলাপে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন : অভিভাবকদের বুকে রক্তক্ষরণ

আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২১
0

এস এম হৃদয় রহমান : মেহেজাবীন চৌধুরী এবং আফরান নিশো অভিনীত এবং রুবেল হাসান নির্মীত ঈদের বিশেষ নাটক ‘ঘটনা সত্য’ তে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরকে বাবা মায়ের ‘পাপ কর্মের ফল’ বলে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে তাতে আমাদের সমাজের প্রতিটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের পরিবারের অভিভাবকদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটেছে।

একটি বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা থেকে এরকম কথার বিস্তার ঘটানো একটি বুদ্ধিবৃত্তিক অপরাধের শামিল। যদিও ইতোমধ্যে নাটকের অভিনেতা, অভিনেত্রী, প্রযোজক, পরিচালক কলাকুশলীসহ প্রচারণা প্রতিষ্ঠান নাটকের সংলাপটির কারণে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছে।

যেখানে দেশে দেশে সরকারগুলো, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনগুলো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের কল্যাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে; তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে সেখানে এরকম একটি কথা বলা, তাও নাটকের সংলাপে যা কোন মতেই কাম্য নয়। শিক্ষিত সমাজ থেকে কুসংস্কারের বার্তা প্রতিধ্বনিত হওয়ার মতই একটি ঘটনা ঘটেছে। আমাদের প্রচলিত সমাজের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার অভাব, কুসংস্কারাচ্ছন সমাজের মানুষরা যেরকম ভুল বার্তা সমাজকে দেয় সেরকমই একটি ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে নাটকটিতে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষরা আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ প্রতিটি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তাহলে আল্লাহর সৃষ্টিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত মতামত, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষরা আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্য। কুসংস্কারাচ্ছন সমাজের মানুষরা যেরকম ভাষায় কথা বলে থাকে, সেরকম ভাষায় কথা বা সংলাপ যদি কোন নাটকে বলে এবং সে নটাকের কলাকুশলীরা সে নাটক কোন এডিট ছাড়াই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে তাতে প্রশ্ন থাকে তাদের শিল্পকর্ম নিয়ে, তারা সমাজের মানুষকে ঠিক কি বার্তা বা মেসেজ দিতে চাচ্ছে? তা নিয়ে। এরকম বার্তা আর কোন নাটকে এবং আর কোন মাধ্যমে না দেয়া হউক সেটাই প্রত্যাশা।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষকে যদি যথার্থ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়; তারা অনেক সাধারণ মানুষের থেকে অসাধারণ কিছু করে সমাজকে আলোকিত করতে পারে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ বা প্রতিবন্ধী মানুষরা সমাজের বোঝা নয়, এ সমাজের সৌন্দর্য, এ পৃথিবীর সৌন্দর্য।

লেখক : ফ্রিল্যান্স সংবাদকর্মী।