নীলফামারীতে কড়াকড়ি লকডাউন সৈয়দপুরে কৌতুহলী মানুষের ভিড়

আপডেট: জুলাই ১, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারী জেলা সদরে বেশ কড়াকড়ি ভাবে অতিবাহিত হচ্ছে শাটডাউনের প্রথম দিন। পাশাপাশি তার উল্টো চিত্র বিরাজ করেছে সৈয়দপুরে। কিন্ত অন্য উপজেলাগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই অতিবাহিত হচ্ছে প্রথমদিন।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নীলফামারী, জলঢাকা, ডোমার পৌর শহরসহ কিশোরগঞ্জ ও ডিমলা উপজেলায় সড়কগুলোতে ভারী যানবাহন দেখা না গেলেও চলাচল ছিলো রিকসা ভ্যান আর অটোরিকসার। বন্ধ ছিলো প্ররায় সব ধরণের দোকান পাট।

জেলাজুড়ে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণ, মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য বিজিবি, সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। এছাড়া কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এদিকে সকালে জেলা শহর ও সৈয়দপুরে লকডাউন বাস্তবায়নে বিশেষ মহড়া চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল নীলফামারীর সড়কে টহল দেয়ার পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান জানান, আইন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছে পুলিশের প্রতিটি সদস্য। লকডাউনে যাতে সরকারী নির্দেশ প্রতিপালিত হয় সেজন্য আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করবো।

বিজিবি নীলফামারী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য কাজ করবে লকডাউন চলাকালে। বৃহস্পতিবার থেকেই জেলা সদর ছাড়াও ইউনিয়নগুলোতেও টহলে থাকছে তারা।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা মুরাদ হাসান বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালিতি হচ্ছে এবং সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে শুরু হওয়া লকডাউনে।

জেলাশহর সহ অন্যান্য উপজেলায় লকডাউনের সার্বিক চিত্র এমন থাকলেও সৈয়দপুরে এর ব্যতিক্রম ছিল। রিকসা, অটো, মোটর সাইকেলের পাশাপাশি ভাড়ি মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ও ট্যাংকলড়ি চলাচল করেছে। এমনকি একটি ট্রেনও চলেছে সৈয়দপুর টু পার্বতীপুর।

এছাড়া প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেট বন্ধ থাকলেও শহরের জিকরুল হক সড়ক, জহুরুল হক সড়ক, সামসুল হক সড়কের অধিকাংশ দোকান খোলা ছিল। সাটার অর্ধেক খোলা রেখে কেউ বাইরে দাড়িয়ে বা কেউ ভিতরে বসে বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। দুপুরবেলা শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়কের জুতার শোরুম “অমনি” তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করার পর সাময়িক বন্ধ করেছিল ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে সকাল ৯ টা নাগাদ শহরের সড়ক ও বাজারে লোক সমাগম কম দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে যেন মানুষের ঢল নামে। পায়ে হেটে, রিকসা বা মোটর সাইকেলে আগত লোকজনের ভিড় বেড়ে যায়। আগতরা যতটা না প্রয়োজনে এসেছে তার চেয়ে বেশি কৌতুহল বশতঃ। সেনাবাহিনী, ভিজিবি’র টহল দেখতে আসা।

শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বর সংলগ্ন পুলিশ বক্স কেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশের অবস্থান ও প্রতিবন্ধক থাকলেও অন্য মোড় বা প্রধান সড়কে তেমন জোরদার টহল না থাকায় কাপড় মার্কেট, মাছ ও সবজি বাজার, বিচালিহাটি, রেল লাইনের দুই পাশে শত শত মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। কোন কাজ ছাড়াই তারা ঘন্টার পর ঘন্টা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরছিল।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল হাসনাত খান বলেন, পুলিশ বক্স, পোস্ট অফিস মোড়, মদীনা মোড়, ওয়াপদা মোড়, বাস টার্মিনাল ও রাবেয়া মিল মোড়ে পৃথক পৃথক ট্রাফিক পুলিশ দল অপ্রয়োজনে শহরে প্রবেশকারীদের প্রতিহত করাসহ জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করছে। এর পাশাপাশি আমার ও ওসি (তদন্ত) এর নেতৃত্বে দুটি দল শহর জুড়ে টহল দিয়েছে।

তিনি বলেন, মানুষ নানা অজুহাতে অহেতুক বাড়ির বাহিরে এসেছে। যথাসম্ভব তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রথম দিন হওয়ায় এটুকু ছাড় পেয়েছে। আগামীতে আর কোন অজুহাতে কাজ হবেনা। কঠোরভাবেই লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে।