‘পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্পে খরচ কমিয়ে ধান উৎপাদনে লাভবান কৃষকরা

আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন থেকে ‘পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন পদ্ধতিতে চাষের প্রশিক্ষন নিয়ে ধান চাষ করে লাভবান হয়েছেন। উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ২০ গ্রামের ৩’শ কৃষক পরিবার এ ভাবে ধানের চাষ করেন। এ অবস্থায় খরচ কমিয়ে ধান উৎপাদনে বিকল্প পথ বেছে নিয়েছেন উপজেলার ৩শ’ কৃষক।

সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্প’ এর আওতায় ধান রোপন করা জমির এক কোণায় মিনি পুকুর খনন করছেন। সেই পুকুরে বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সেখানে করছেন মাছ চাষ। পাশাপাশি সেচ হিসেবে ব্যবহার করছেন ওই পুকুরের পানি। পুকুরের চারি পাশে রোপন করছেন লাউ, বেগুন, পেঁপে, কচু, কলা, সীম, টমেটোসহ নানা প্রজাতির শাকসবজি। পুকুরের মাছ ও শাক সবজি বিক্রি করে তারা আর্থিক ভাবে হচ্ছেন লাভবান।

আর পুকুরের পাশে জমিতে উৎপাদন হচ্ছে ধান। ধানের লোকসান পুষিয়ে নিতে কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ও সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ২টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ৩শ’ জন চাষী বিকল্প এই পদ্ধতিতে চলতি বোরো মৌসুমে শুরু করেছেন চাষাবাদ। কৃষকেরা জানান এক বিঘা জমিতে চাষ দেয়া বাবদ ৩৪শ’ টাকা, বীজ ও বীজতলা খরচ বাবদ ৮৫০, সেচ বাবদ ২ হাজার টাকা, সার, কীটনাশক, আগাছ পরিস্কার, ধানকাটা, পরিবহন, ধানঝাড়া, শ্রমিক খরচ দিয়ে মোট খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। অবশ্য আমনে সেচ খরচ কম অর্থাৎ ১ হাজার টাকা লাগে। এক বিঘা জমিতে ধান পাওয়া যায় ৩৩ মণ। যার বাজার মূল্য ৭০০ টাকা করে পাওয়া যায় ২৩ হাজার ১০০ টাকা। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্না রানী সাহা বলেন, সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্পের আওতায় কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ পদ্ধতি গ্রহন করা হয়েছে। বর্তমানে দিন দিন সাধু পানি কমে যাচ্ছে।

সেই পানি যাথে অযথা অপচয় না হয়, সেই অপচয় রোধ করার জন্য এবং পানির সর্বাত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শিবুপদ বিশ্বাস জানান, জাপান ফান্ড ফর গ্লোবাল এনভাইরমেন্ট (জেএফজিই) আর্থিক সহযোগিতায় ২০১৮ সাল থেকে শেয়ার দ্য প্লানেট অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় কালীগঞ্জের ২০ গ্রামে পানি সাশ্রয়ী কার্যকরী কৃষি অনুশীলন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে আসছে।

পুকুরে পানি কিভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, কিভাবে ক্ষেতে দিতে হবে, পুকুর পাড়ে কিভাবে সবজী উৎপাদন করতে হবে এসব বিষয়ে তাদের ওরিয়েন্টেশন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বীজ সংরক্ষণের জন্য তাদের ড্রাম প্রদান ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কৃষকদের লাভজনক সফল উৎপাদনে রোরোর পরিবর্তে রবি শস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার বলেন, সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় যেভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে তাতে কৃষকরাই লাভবান হচ্ছেন। এ ছাড়া ভুগর্ভস্থ পানির চাপও কম হবে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তারা সেচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।