গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে এক নারীর ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্টস করাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড চেয়ে সোমবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালত গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড শুনানীর পরবর্তী তারিখ নির্ধারন করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার কোচেরচর গ্রামের মোস্তফার ছেলে বেলায়েত হোসেন (২৪) ও সিরাজুল ইসলামের ছেলে শেখ সাহেদ (১৬), একই উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে মো: ফয়সাল (১৮) এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চরসনমানিয়া গ্রামের রিপনের ছেলে মারুফ (১৫)। গ্রেফতারকৃতরা সবাই দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় আসামী।
গাজীপুর আদালতের ইন্সপেক্টর মো মনিরুল ইসলাম জানান, কাপাসিয়া থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত চারজনকে সোমবার গাজীপুরের আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত ফয়সাল (১৮) ও বেলায়েত হোসেনকে (২৪) গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা ফারুকের আমলী আদালতে হাজির করা হয়। শুনানী শেষে আদালত গ্রেফতারকৃত ওই দুইজনের রিমান্ড শুনানীর তারিখ আগামী ২০ মার্চ ধার্য্য করেন। এদিকে প্রাপ্ত বয়স না হওয়ায় অপর গ্রেফতারকৃত মারুফ (১৫) ও শেখ শাহেদকে (১৬) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপী’র আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানী শেষে তাদের রিমান্ড শুনানীর তারিখ আগামী ২২ মার্চ ধার্য্য করেন।
কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম জানান, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগঁাও চরপাড়া গ্রামের জাহিদের স্ত্রী মারিয়ার পার্সোনাল ফেইজবুক আইডিতে একটি ছবি আপলোড করে। ওই ছবিতে একই গ্রামের নাঈম রিয়েক্ট/কমেন্টস করে। রিয়েক্ট করার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহিদের পক্ষে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার কোচের চর গ্রামের ইয়াসিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে নাঈমের ঝগড়া হয়। এ ঘটনার জেরে জাহিদ ও তার লোকজন শনিবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাপাসিয়ার দক্ষিণগঁাও গ্রামের আড়াল-চরপাড়া সড়কে মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ও মারধরে এক কিশোরসহ তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগঁাও চকপাড়া গ্রামের আলমের ছেলে ফারুক (২৩), মৃত আলমের ছেলে নাঈম (১৫), মৃত হিরন মিয়ার ছেলে রবিন (১৫)। ঘটনার সময় হামলাকারীদের কাছ থেকে বাঁচাতে গিয়ে হৃদয় (১৪), ফাহিম (১৬) ও ইমরান (১৪) আহত হয়। এ ঘটনায় নিহত ফারুকের পিতা আলম বাদী হয়ে রবিবার কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মো: জাহিদকে (২৪) প্রধান করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ সোমবার চারজনকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শেখ মো: আমিরুল ইসলাম জানান, ফেইসবুক কমেন্টসকে কেন্দ্র করে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পলাতক এবং জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়াও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
গাজীপুর।
১৪/০৩/২০২২ ইং।