ফেসবুকে কমেন্টস দেওয়ার জেরঃ দু’পক্ষের সংঘর্ষে কিশোরসহ নিহত ৩, আহত ৪, আটক ৪

আপডেট: মার্চ ১৩, ২০২২
0
ক্যাপশনঃ গাজীপুর ঃ কাপাসিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতরা ও তাদের স্বজনদের আহাজারী। ###

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে এক নারীর ফেসবুকের স্ট্যাটাসে কমেন্টস দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এক কিশোরসহ তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। শনিবার মধ্যরাতে জেলার সীমান্তবর্তী কাপাসিয়া উপজেলার সম্মানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগঁাও চরপাড়া এলাকায় দুই জেলার যুবকদের মাঝে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার যুবককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।

নিহতরা হলেন- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগঁাও চড়পাড়া এলাকার আলম হোসেনের ছেলে ফারুক হোসেন (২৬), একই গ্রামের মৃত আলম মিয়া ছেলে নাঈম হোসেন (১৮) ও মৃত হিরণ মিয়ার ছেলে রবিন (১৫)। এদের মধ্যে ফারুক রাজ মিস্ত্রি এবং রবিন ও নাঈম কাপড়ের দোকানে চাকুরি করতেন।

কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) পারভেজ আহমেদ সেলিম ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার চরআলীনগর এলাকার জাহিদের স্ত্রী মারিয়ার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ব্যাঙ্গাত্মক কমেন্টস করেন একই থানার দক্ষিণগঁাও এলাকার যুবক নাঈম। এনিয়ে জাহিদের আত্মীয় ইয়াসিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে নাঈমের ঝগড়া হয়। এ ঘটনার জেরে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই তীরের নরসিংদী জেলার মনোহরদি থানার দৌলতপুর এলাকার যুবকদের সঙ্গে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগঁাও এলাকার যুবকদের মাঝে বিরোধ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। এঘটনার পর শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরছিল কাপাসিয়ার সম্মানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও এলাকার নাঈম, রবিন ও ফারুকসহ ক’যুবক ও কিশোর। পথে তারা বাড়ির পার্শ্ববর্তী আলম সরকারের গার্মেন্টসের পার্শ্ববর্তী মসজিদের কাছে পৌছলে তাদের গতিরোধ করে প্রতিপক্ষের লোকজন ফেসবুকে ব্যাঙ্গাত্মক কমেন্টসের কারণ জানতে চায়। এ নিয়ে তাদের মাঝে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। ঘটনার সময় রবিনের বড় ভাই বিষয়টি মিমাংসা করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে তাদের উপর পেছন থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালালে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় প্রতিপক্ষের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ফারুক, নাঈম, রবিনসহ উভয় পক্ষের ৭জন আহত হয়। এলাকাবাসি আহতদের উদ্ধার করে মনোহরদী ও কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং দুই যুবককে আটক করেন। মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফারুক ও নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গুরুতর আহত রবিনকে ওই হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে তিনি মারা যান।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় আহত কাপাসিয়ার মির্জানগর এলাকার ইসমাইলের ছেলে হৃদয় (১৪), মাঈন উদ্দিনের ছেলে ইমরান (১৪) ও আমজাদের ছেলে ফাহিমকে (১৬) গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং চরআলীনগর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে জাহিদকে (২৪) ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক দুই যুবকসহ চার যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাপাসিয়া থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতরা হলো- বেলায়েত (২৩), ফয়সাল (১৭), শেখ সাহেদ (১৬) ও মারুফ (১৬)। এ ঘটনায় নিহত ফারুক হোসেনের বাবা বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।