রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: সারা বিশ্বের মতো বরিশালের বানারীপাড়ায়ও কোভিড-১৯ মহামারী করোনাভাইরাস মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে। বিশেষ করে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে করোনা মোকাবেলায় লকডাউন, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা এবং অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ থাকায় একপ্রকার বন্দি জীবন-যাপন করতে হয়েছে এখানকার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্বিবদ্যালয় পড়ুয়া সকল বয়সের শিশু- কিশোর, তরুণ-তরুণীদের।
বিশ্বে করোনা সংক্রমণের প্রায় ১টি বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় করোনা সংক্রমণরোধে ভ্যাকসিন নেওয়াসহ এখনও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় টিনেজ তরুণ-তরুণীরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অনেকেই ঘরের বাহিরের বের হয়ে হাট-বাজারে বা পার্কে আড্ডা মেরে সময় কাটাচ্ছে। আর যখন ঘরে থাকছে তখন ইন্টারনেট, মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ হয়ে উঠেছে তাদের সময় কাটানোর অন্যতম সঙ্গী। সেই সঙ্গে পড়াশোনার চাপ না থাকায় অনলাইনে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে, মুভি দেখে তাদের সময় কাটছে।
ছোট থেকেই কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাব হাতে নিয়ে বড় হচ্ছে এখনকার টিনেজ প্রজন্ম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়ালেখার পাশাপাশি নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর দিকেও তাদের ঝুঁকে পড়ার সুযোগ থাকে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ইভটিজিংয়ের হার একেবারে কমে আসছে। তবে বাল্য বিয়ের হার ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। টিনেজ তরুণদের মধ্যে মাদকের নেশা বিশেষ করে গাঁজা ও ইয়াবার আসক্তি অনেকটা বেড়ে গেছে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা রয়েছে। উঠতি বয়েসী কিছু তরুণদের বিভিন্ন বাহারী স্টাইলে চুল কাটার বিষয়ে সচেতন মহলের অভিযোগ রয়েছে। স্কুলপড়ুয়া তরুণরা যাতে সন্ধ্যার পরে ঘরের বাহিরে বের হতে না পারে এবং তরুণ ও যুবকরা যাতে যাচ্ছেতাই স্টাইলে চুল কাটতে না পারে এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, “কমিউনিটি পুলিশিং ডে” আয়োজন করে আমরা পৌর শহরের পাড়ায় পাড়ায় এবং প্রতিটি ইউনিয়নের অভিভাবকদের ডেকে তাদের সন্তানদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছি। বিশেষ করে মাদক,বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং ও হেয়ারস্টাইলের ব্যাপারেও সকলকে সচেতন করা হয়েছে। টহল পুলিশের মহড়ার মাধ্যমে মাদকসেবীদের ধরে এনে আইনের আওতায় নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।###
রাহাদ সুমন,
বানারীপাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধি