বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আজ এক যৌথ বিবৃতিতে চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বকেয়া বেতনসহ ৬ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫জন মেহেনতি শ্রমিককে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, দেশের যেকোন নায্য আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করছে। বাঁশখালিতে এর ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের গুলিতে আজ ৫জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। হতাহত হয়েছে বহু শ্রমিক। এই হত্যাকান্ড রাষ্ট্রীয় হত্যার শামিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা যাদের ওপর ঘুড়ে সেই শ্রমিকরা আজ নির্মম নির্যাতনের শিকার। সরকার ঘোষিত এই কঠিন লকডাউনের সময় শ্রমিকের ঘরে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। আজ যেখানে প্রতিটি শ্রমিকের স্বাভাবিক জীবনের দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত ছিল সেখানে বাঁশখালিতে যে ঘটনা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ঘটিয়েছে তা ইতিহাসের নতুন শিকাগো বলে পরিচিতি পাবে। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি, যেসকল শ্রমিকরা গতকাল জুম্মার নামাজে অংশ নিয়েছিল তাদের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এমতাবস্থায় ধর্মপ্রাণ শ্রমিকরা ইফতার ও নামাজের সুযোগ দেওয়া, বকেয়া বেতন পরিশোধ, যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের পুর্নবহাল, রমজানে কর্মঘন্টা কমানোসহ ৬ দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নায্য অধিকার বাস্তবায়ন করে তাদের কাজে ফিরিয়ে আনা ছিল যৌক্তিক সমাধান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে দিতে গিয়ে আজকের এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টি করেছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে ৫ জন শ্রমিকের মৃত্যর খবর নিশ্চিত করেছে। এখনো বহু শ্রমিক হাসপাতালে মৃত্যর মুখোমুখি। আমরা জানি না এই মৃত্যর মিছিল কোথায় গিয়ে শেষ হবে। আজকের এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের অবিলম্বের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
যেসব অতি উৎসাহী পুলিশ নিরিহ শ্রমিকদের ওপর গুলিয়ে চালিয়েছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসাসহ সার্বিক দায়িত্ব সরকার নিতে হবে। অনতিবিলম্বে শ্রমিকদের সকল নায্য দাবি মেনে নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে সারাদেশের শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে এই অন্যায় হত্যাকান্ডের সুমচিত জবাব দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।