ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপেজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের বামুনের কুঠি গ্রামের হত দরিদ্র দর্জি মাসাদুজ্জান মিন্টূ ও রাহেলা খাতুনের কন্যা মেধাবী মুখ মাসূমা আক্তার মীম। চরম দারিদ্রতা ও করোনায় বিভিন্ন সময়ে লকডাউনের কারনে তার পরিবারের আয় কমে গিয়েছিল।পড়ালেখার খরচ রোগাতেও কষ্ট হচ্ছিল তার বাবা মায়ের।
মীম এখন নাগেশ্বরী সরকারী কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। মীম গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও মীমের মুখে ছিলনা হাসি। শঙ্কা আর উৎকণ্ঠায় দিন পার হচ্ছিল তার। মীমের চোখে মুখে ছিল বিষাদের ছায়া।অর্থ সংকট আর চরম দারিদ্র্যতায় মীমের লেখাপড়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ছিল।
ঠিক এই সময়ে মীমের পড়ালেখা চালানোর জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় “কালের কন্ঠ শুভসংঘ”। তাকে দেয়া হয় মাসিক বৃত্তি।মেধাবী মীমের পরিবারের দুর্বিসহ জীবনে কিছুটা হলেও স্বত্বির নি:শ্বাস ফেলেছে শুভ সংঘের এই সহযোগিতায়। বৃত্তি পেয়ে খুশি মীমের পরিবার।
উল্লেখ্য মীমের পরিবারের চরম দারিদ্রতা আর হতাশা নিয়ে কালের কন্ঠ অনলাইনে “অর্থ সংকটে লেখাপড়া অনিশ্চিত হতদরিদ্র মেধাবী মীমের” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি “শুভসংঘ ভূরুঙ্গামারী উপজেলা” শাখার দৃষ্টি গোচর হলে তারা কেন্দ্রীয় শুভসংঘ পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে কালের কন্ঠ কেন্দ্রীয় শুভসংঘ পরিচালনা কমিটি মেধাবী মীমকে মাসিক বৃত্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রতি মাসে বৃত্তির টাকা পাবে মীম। তার ধারাবাহিকতায় চলতি আগষ্ট মাসের বৃত্তির টাকা মীমের বাবা মিন্টু মিয়ার বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয়েছে।
শুভসংঘের দেয়া বৃত্তির টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মীমের বাবা মাসাদূজ্জামান মিন্টু।
বৃত্তির টাকা পেয়ে আনন্দে আত্নহারা মীমের পরিবার।খুশি মেধাবী মীমও।আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন দারিদ্র্যের কষাঘাতে পিষ্ট মিন্টু মিয়া। তিনি বলেন, করোনার এই চরম সংকটময় সময়ে “কালের কন্ঠ শুভসংঘ’র দেয়া বৃত্তির টাকা হাতে পেয়ে আমি এত খুশি যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা।”কালের কন্ঠ শুভসংঘ” নামের সংঘটনটি আমাদের এই দু:সময়ে মীমের পড়ালেখার খরচ যোগাতে পাশে দাড়িয়েছেন এজন্য আমি “কালের কন্ঠ শুভসংঘ” পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি ধন্যবাদ জানান দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক পক্ষকেও।
রায়গন্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বলেন, ‘মীম অত্যন্ত মেধাবী। কিন্তু তাদের থাকার ঘরও নেই বলা যায়। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে স্কুলে পড়িয়েছে তার বাবা মা। এসব কারণে মীমের কাছ থেকে কখনও স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি নেইনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও আমরা শিক্ষকরা সব সময় মীমকে সহযোগিতা করেছি। এখন সে কলেজে পড়ছে।মেয়েটির শিক্ষা গ্রহন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এজন্য “কালের কন্ঠ শুভসংঘ” নামের একটি সংঘটন মীমকে বৃত্তি দিচ্ছে শুনে খুব খুশি হলাম। এই মহতী উদ্যোগের জন্য “কালের কন্ঠ শুভসংঘ” পরিবারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
####
আমিনুর রহমান বাবু