লেখক মোশতাকের কারাগারে মৃত্যুতে স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্ত এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহবান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের ও আহবান জানানো হয়েছে সংস্থাটির তরফে।
সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট কিশোরের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেও বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের অহ্বান জানান। বিবৃতিতে হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পুনর্বিবেচনা চেয়ে বলেন, আইনটির পুংখানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ জরুরি। আইনটির অধীনে আটকদের দ্রুত মুক্তির দাবিও করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ওই দূত।
মুশতাকের মৃত্যুতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ায় রুহুল আমিন নামে একজনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা করা হয় জাতিসংঘের বিবৃতিতে। বাশেলেট বলেন, সরকারের সমালোচনার শাস্তি দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুর্বলভাবে সংজ্ঞায়িত বিধানগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
জরুরি ভিত্তিতে আইনটির প্রয়োগ স্থগিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এর বিধানগুলো পর্যালোচনা করা দরকার। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলাপে তিনি এবং তার দপ্তর প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান জাতিসংঘ দূত।
মুশতাককে গত বছর মে মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। বিনা বিচারে নয় মাস তিনি কারাবন্দি ছিলেন। বার বার তার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারেই মারা যান মুশতাক। একই অভিযোগে এখন আটক রয়েছেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোর।
তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অভিযোগের তাৎক্ষণিক ও কার্যকর তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে কিশোরের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারকেই মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অপর আটককৃতদের সঙ্গে অসদাচরণের যে অভিযোগ এসেছে তারও দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত। মুশতাকের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের হামলায় ৩৫ জন আহত এবং সাত জন আটকের খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট।