এস এম হৃদয় রহমান : গত প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলাদেশের শিশুরা ঘর বন্দি বলা চলে। বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিশু শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের কমিউনিকেশনের ব্যবস্থা থাকলেও যেসব শিশুরা এখনও বিদ্যালয়গামী নয় তাদের জন্য অভিভাবক ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে কোন কমিউনিকেশনের ব্যবস্থা নেই। ঘর বন্দি এ শিশুদের প্রাণস্পন্দন যেন বন্ধ হওয়ার উপক্রম প্রায়। বিরক্তিকর এক সময় কাটছে শিশুদের। চাকরিজীবী বা পেশাজীবী বাবা-মা এর শিশুদের জন্য সময়টা বড় বিরক্তির।
নিজেদের মত করে হেসে খেলে এই বিরক্তিকর সময়টা পার করতে পারার জন্য শিশু কিশোররা ঠিক কি করতে পারে সেরকম কোন গাইডলাইন এখনও বিস্তৃত পরিসরে কোথাও থেকে পাওয়া যায়নি।
তবে শিশুদের মানসিক বিকাশে আমরা সাধারণভাবে জানি যে খেলাধুলা অথবা ঘুরে বেড়ানোর কোন বিকল্প নেই। গ্রামাঞ্চলে খেলাধুলার পরিবেশ কিছুটা থাকলেও শহরাঞ্চলে অনেক জায়গায়ই খেলাধুলার পরিবেশ নেই। ঘুরে বেড়ানোতে তো নানা রকম নিয়ামবলীর বিষয় থেকে যায়। আর করোনার এই সময়ে ঘুরে বেড়ানো সম্ভবপর হচ্ছে না অনেকের ক্ষেত্রেই।
লকডাউনের কারণে পরিবারের মানুষদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের সময় দেয়ার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছিল এখন সেটাও প্রায় শেষ হয়ে গেছে চাকরি অথবা ব্যবসার বদৌলতে পরিবারের মানুষগুলো একেকদিকে ছুটে বেড়ানোর কারণে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান সময়টি শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য অন্তরায়। এই পরিস্থিতিকে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য ক্রান্তিকাল হিসেবেই দেখছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন শিশুদেরকে ঘরোয়া পরিবেশে বিভিন্ন কর্মকান্ডে ব্যস্ত রাখা গেলে কিছুটা লাভবান হওয়া যেতে পারে। গান, গজল, আঁকা-আঁকি, বাগান করা (যদি সম্ভব হয়)। এছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে কিছুক্ষন ঘরের নিকটেই কোথাও ঘুরা ফেরা করার ব্যবস্থার দিকে জোর দিতে দেখা গেছে। যেসব শিশুরা অনলাইনে ক্লাস করছে তাদের জন্য বেশিক্ষন স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়ে থাকার দিকেও বিশেষজ্ঞদের মতামত রয়েছে। মাঠে গিয়ে খেলাধুলা যাদের সম্ভব তাদের জন্য সেটা সবচেয়ে ভাল পন্থা বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা তবে স্বাস্থ্যবিধী মেনে বের হওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
লেখক- ফ্রিল্যান্স সংবাদকর্মী।