সেই এসপি মোক্তার হোসেনকে নিয়ে না’গঞ্জের ফতুল্লায় তোলপাড়

আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তার ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর নারায়ণগঞ্জ সদরের ফতুল্লার সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভাই মোক্তারের প্রভাবে আক্তার হোসেন ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় গড়ে তুলেছ অপরাধের বিশাল সম্রাজ্য। আক্তারের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দটি করলে তার জীবনে নেমে আসতো নির্যাতনের চরম খড়গ। ফলে তার সৃষ্ট অপরাধের বিরুদ্ধে টু শব্দটি পর্যন্ত করার সাহসটুকু পর্যন্ত করেনা।
গ্রামের বাড়ী কুমিল্লায় হলেও তারা বসবাস করন ফতুল্লা থানার রামারবাগ এলাকায়। বাবা সুলতান মৌলভী ছিলেন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক। ফতুল্লার রামার বাগেই বেড়ে উঠা। পিবিআই পুলিশ সুপার মোক্তারের ছোট ভাই আক্তার ফতুল্লার রামারবাগ এলাকাজুড়ে কায়েম করে রেখেছে ত্রাসের রাম রাজত্ব।
স্থানীয়রা জানায়, চুন থেকে পান খসলেই যে কাউকে মারধর করে আক্তার। মারধর করে নাক মুখ ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে আবার হুমকি দিয়ে বলেন “যা থানায় যা বাবাদের বল আমার কিছু ছিড়তে”। “টাকা লাগবে দিতে হবে, না বলে কোন কথা শুনতে চাই না”। চোঁখ বড় করে মুখটি ফুলিয়ে যাকে তাকে এভাবে হুমকি দেয় সে। থানায় গিয়ে পুলিশ আনলেও আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়না। উল্টো পুলিশ বলে যায় মিমাংসা করে ফেলেন তার ভাই এসপি। সে ফোন করে ধমক দেয় তার বিরুদ্ধে কিছুই করা যাবেনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসপি মোক্তারের প্রশ্রয়ে প্রকাশ্যে আক্তার ইয়াবা নামক মাদক বিক্রি করছে। পুলিশ কয়েক বছর আগে ইয়াবাসহ আক্তারকে আটক করে। তখন এসপি মোক্তার ফোন করে তাকে ছাড়িয়ে দেয়। এরপর কাঁচপুর এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয় আক্তার।
পুলিশ পাঠিয়ে সেখান থেকেও আক্তারকে উদ্ধার করে এসপি মোক্তার। সম্প্রতি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামালের ছেলে ও ভাতিজাকে মারধর করে নাক মুখ ফাটিয়ে দেয় আক্তার। এবিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি ওই নেতা।
পুলিশ জানায়, আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় রয়েছে। তাকে আটক করলেই এসপি মোক্তার ফোন করে তদ্ববীর করেন। পুলিশের একজন উর্ধ্বতন অফিসার হওয়ায় তার তদ্ববীর না শুনে কেউ পারেনা।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ৩০ মে রাতে কোন কারন ছাড়াই আমার ছেলে ও ভাতিজা এলোপাথারী মারধর করে আক্তারসহ ৫জন। এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের কাছ থেকে আমার ছেলে ও ভাতিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। মারধরের কারন জানতে চাইলে তারা আমার উপরও ফুসে উঠে। এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ রহস্যজনক কারনে মামলা নেয়নি। তবে তাদের সঙ্গে আপোষ করে ফেলার জন্য অনুরোধ করেন। আমি এখনো তাদের বিরুদ্ধে বিচার চাই। এবিষয়ে সরাসরি জানতে চাইলে আক্তার কোন মন্তব্য করেনি।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তফা কামালের সঙ্গে তারা আপোষ করবে তাই মামলা হয়নি। পরে কেউ অভিযোগও করেনি। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।