সৈয়দপুরে রেলওয়ে পুলিশ সুপারের বাসভবনে ৩০ ঘুঘু’র নিরাপদ বসবাস

আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ

নীলফামারী সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এর বাসভবনে ৩০টি ঘুঘু পাখি বাসা বেঁধেছে। পাখিগুলো নিরাপদে সেখানে ডিমও পেড়েছে। ঘুঘুদের বসবাসে যেন কােন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেইজন্য পরিবেশ ও প্রকৃতি নিরবচ্ছিন্ন এবং নিরিবিলি রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। ফলে এক প্রকার অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে গাছপালা ঘেরা ব্রিটিশ আমলের তৈরি রেলওয়ের ওই বাংলোটি।

সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে অফিসার্স কলোনিতে প্রায় দুই একর জমির ওপর বিশাল বাসভবন পুলিশ সুপারের। এর দক্ষিণে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব। আর পূর্বপাশে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের (ডিএস) বাসভবন। মাঝ দিয়ে গেছে বিমানবন্দর সড়ক। ওই বাসভবনে স্ত্রী-সন্তানসহ পুলিশ সুপারের বসবাস।

ভবনের পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে মনোরম বাগান। সেখানে রয়েছে বেশ কিছু লিচু ও বাহারি ফুলের গাছ। ভবনের সামনে গোলঘর, গেট, লিচু বাগান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের সবখানে বাসা বেঁধেছে ঘুঘু পাখি।

পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান জানান, ভবনের ৩০টি স্থানে বাসা বেঁধেছে ঘুঘু পাখি। এ কারণে প্রচণ্ড গরম থাকা সত্ত্বেও এসি ছাড়তে পারছি না। লিচু বাগানেও কীটনাশ স্প্রে করা যাচ্ছে না। ওই পাখিগুলো যাতে স্বস্তিতে ডিম পাড়তে পারে এ জন্য বাসভবন ও এর প্রাঙ্গণজুড়ে কড়া সতর্ক পাহারা বসানো হয়েছে। রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ কোলাহলমুক্ত।

তিনি বলেন, আমার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসা দর্শনার্থীদের সাথেও গোলঘরে বসা হচ্ছে না। কেউ উচ্চস্বরে কথা বলছে না। লিচু বাগানে ফল এসেছে। এ সময় কীটনাশক স্প্রে করতে হয়; কিন্তু আমি আমার লোকদের তাও নিষেধ করেছি।

পাখিপ্রেমী পুলিশ সুপার আরও বলেন, ছেলেবেলায় এয়ারগান দিয়ে কত পাখি মেরেছি। অথচ এখন দেখুন পাখিদের জন্য খুব মায়া হচ্ছে। ওদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সপরিবারে কষ্ট করছি।

এ নিয়ে কথা হয় পাখি ও পরিবেশবাদী সংগঠন সেতুবন্ধনের সভাপতি আলমগীর বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা সার্বিকভাবে এসপি সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমানকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করব।

এদিকে এসপি’র বাসভবনে ঘুঘুর বসবাসের খবর শুনে অনেকেই আসছেন একনজর দেখতে। কিন্তু গেটের বাইরে থেকেই তাদের মনের আশ মেটাতে হচ্ছে। এমনকি সংবাদকর্মীদেরকেও দূরে থেকেই অবলোকন করতে হয়েছে এ মনোরম দৃশ্য। কোন কারণেই যাতে পাখিগুলোর সমস্যা না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখায় এমনটা করতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশ সুপার মহোদয়। একারণে তিনি সকলকে ব্যাপারটা ইতিবাচকভাবে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।