অর্থ সহায়তার তালিকায় ৫০লাখের মধ্যে সাড়ে ১৪লক্ষ নাম ভূয়া : করোনা সরকারও আ’লীগের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে– মীর্জা ফখরুল

আপডেট: জুলাই ৮, ২০২১
0

মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গরীবদের অর্থ সহায়তায় বড় ধরনের চুরির অভিযোগ তুলে বলেছেন , ”সরকার জনগণের টাকা জনগণকে দিচ্ছে না, অথচ অযৌক্তিকভাবে ১ কোটি টাকার প্রকল্প ২ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকল্প সময় বৃদ্ধির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হরিলুট করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনপ্রতি ২৫০০ টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি আর হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী চুরিরর কাহিনী – এসব দেখে মনে হয় করোনা সরকার দলীয় লোকজনের জন্য যেন বরং আশীর্বাদ হয়ে এসেছে! অর্থমন্ত্রণালয়ের এক অবস্থানপত্রে ধরা পড়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রদেয় ৫০ লক্ষের তালিকার ১৪ লক্ষ ৩৩ হাজার জনের নামই ভুয়া।”

বৈশ্বিক মহামারী করোনা মোকাবেলায় রোডম্যাপহীন বাংলাদেশ:পরিকল্পনাহীন লকডাউনে বিপর্যস্ত ‘দিন আনে দিন খায়’ শ্রেণীর কর্মহীন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চিত্র তুলে ধরে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মীর্জা ফখরুল বলেন , মেগা প্রজেক্টের মেগা দুর্নীতির সব কাহিনী তো আপনাদের জানা আছে। এ সকল মেগা প্রজেক্টে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে চরম অস্বচ্ছতা, অদক্ষতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় ও মহা দুর্নীতির মহা রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইতোপ‚র্বে অনেকবার বলা হয়েছে। ঐ সকল প্রকল্পের অর্থ বর্তমানে মানুষের জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দিতে পারে সরকার। তা তারা করবে না।

করোনা ক্ষমতাসীনদের জন্য আর্শীবাদ

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি আর হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রি চুরির কাহিনী এসব দেখে মনে হয় করোনা সরকার দলীয় লোকজনের জন্য যেন বরং আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের এক অবস্থানপত্রে ধরা পড়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রদেয় ৫০ লক্ষের তালিকায় ১৪ লক্ষ ৩৩ হাজার লোকের নামই ভুয়া। আজকের পত্রিকায় একটা খবর আছে যে, ঝিনাইদহে দুই জন কোটিপতিকে আ্পনার এই ত্রাণ দেয়া হয়েছে। একজনের নাম খোকন সরকার আরেক নাম হচ্ছে রাজু দাস। তারা কোটিপতি। একজনের জুয়েলারি আছে, আরেকজনের কোম্পানি আছে।”

“ মেগা প্রজেক্টের মেগা দুর্নীতির সব কাহিনী তো আপনাদের জানা আছে। এসকল মেগা প্রজেক্টে প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে চরম অস্বচ্ছতা, অদক্ষতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় ও মহা ‍দুর্নীতির মহা রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। এই ব্যাপারে ইতোপূর্বে অনেকবার বলা হয়েছে। ওই সকল প্রকল্পের অর্থ বর্তমানে মানুষের জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দিতে পারে সরকার। কিন্তু তা তারা করছে না।”

করোনা টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “ আজকে টিকা প্রদানকে গুরুত্ব দিতে হবে। সারা পৃথিবীতে আজকে প্রমাণিত হয়েছে- যেসব দেশ ৭০/৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পেরেছে তারাই কিন্তু করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।এর কোনো বিকল্প নাই।”

“ আমরা লাখে লাখে টিকার হিসাব দেখলে হবে না। এখানে কোটি কোটি টিকা একেক মাসে আসার হিসাব আমরা দেখতে চাই। তাহলেই বাংলাদেশকে করোনার এই ভয়াল গ্রাস থেকে আমরা পরিত্রাণ করতে পারবো, নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। সেই লক্ষ্যে আমি আবার সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি, এই ব্যাপারে রাখ-ঢাক না করে অতি দ্রুত কোটি কোটি টিকা আমদানি করার ব্যবস্থা করেন, জনগনকে রক্ষার ব্যবস্থা করেন, এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকাকে রক্ষা করেন। তা নাহলে আপনারা এদেশের ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন, একদিন এদেশের জনগন আপনাদের ব্যাপারে সঠিকভাবে আপনার ব্যর্থতা ইতিহাসে লেখে রাখবে।”

জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন কমিটির আহবায়ক স্থায়ী কমিটি ইকবাল হাসান মাহমুদ টুক বলেন, “ গত বছর দুই কোটি মানুষের কাছে আমরা সাহায্য পৌঁছিয়ে দিতে পেরেছিলাম। এবার এই দ্বিতীয় টেউয়ের আমরা আগের মতোই ব্যবস্থা নিয়েছি। এবার প্রতিটি জেলায় আমাদের দলের অফিসে হেলথ সেন্টার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ঔষধ- স্বাস্থ্য সামগ্রি থাকবে। অলিরেডি এই কাজ বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়ে গেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি জেলার অফিসে এই হেলথ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।”

দরিদ্র মানুষকে আর্থিক সাহায্য ও খাবার-দাওয়ার। যেহেতু লকডাউন। কোথাও গেলে আমরা প্রশাসনের থেকে বাধাপ্রাপ্ত হই। সেজন্য আমরা যে যা পারি সীমিত সামর্থের মধ্যে মানুষজনকে সহযোগিতার ব্যবস্থা করেছি। একটা বিরোধী দল হিসেবে এতো কষ্টের মধ্যেও আমরা করোনা রোগীদের পাশে আছি ও কাজ করে যাচ্ছি।”

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ বক্তব্য রাখেন।