আওয়ামী লীগ ও সিপিসি’র মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা কামনা প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট: জুলাই ১, ২০২১
0

কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (সিপিসি) শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আজ চীনের জনগণ, দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র মহাসচিব শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পারস্পারিক স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও সিপিসি’র মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা কামনা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

সিপিসি’র শততম প্রতিষ্ঠা-বার্ষিকী উপলক্ষে পাঠানো এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের দুই দলের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা আমাদের দু’দেশের নাগরিকদের অধিকতর কল্যাণ বয়ে আনবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ ও জাতীয় মৌলিক স্বার্থের ভিত্তিতে চমৎকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ তার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীনকে একটি বিশ্বস্ত অংশীদার বলে মনে করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কৃতজ্ঞতার সাথে সম্প্রতি সিপিসি’র পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি উপহার দেয়াসহ কোভিড-১৯ এর এই বৈশ্বিক মহামারীকালে চীন বাংলাদেশকে যে সহযোগিতা ও সহায়তা দিয়েছে তার উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান কৌশলগত অংশীদারিত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন পথ খুঁজছি। পাশাপাশি, আমরা শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের মতো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও কাজ করছি।

তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে-আমাদের দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান আন্তরিক ও হৃদত্যপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এবং সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে (চীনের প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র মহাসচিব শি জিন পিং) এবং আপনার মাধ্যমে চীন সরকার, সিপিসি’র সদস্যবৃন্দ ও চীনের বন্ধু-প্রতিম জনগণকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বিগত কয়েক দশকে বেশ কয়েকজন সিপিসি নেতার বাংলাদেশ-চীন এবং সিপিসি-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক উন্নয়নে অবদানের কথা তুলে ধরে, তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সাউদার্ন সিল্ক রুটের মধ্য দিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে, যা দুটি প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে জ্ঞান, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের চীন সফরের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের একজন তরুণ নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সিপিসি নেতৃবৃন্দের সাথে মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের আরো সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তার বই ‘আমার দেয়া নয়াচীন’-১৯৫২ এ সিপিসি’র নেতৃত্বে চীনকে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চীনের জনগণের প্রবল উদ্যম, কঠোর-প্রত্যয় ও দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ মনোভাবের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা তার অভিনন্দন বার্তায় বলেন, সুবিবেচনাপূর্ণ রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না সকলের জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দেশটিকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে।

মাত্র অল্প কয়েক দশকের মধ্যেই চীন আশ্চর্যজনক ও উৎসাহ-ব্যঞ্জক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে। দেশটি আজ উচ্চ-মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মহাকাশ থেকে ন্যানো প্রযুক্তি, রবোটিক্স থেকে অ্যাভিওনিক্স সব ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটিয়েছে। এছাড়াও, দেশটি আজ বিশ্বমানের পণ্য ও সেবা প্রদান করছে।

তিনি আরো বলেন, এমনকি চীনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর সাধারণ মানুষও উন্নয়ন এই সুফল ভোগ করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘২০৪১ সাল নাগাদ সকল নাগরিক স্বচ্ছলতা আনয়নই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার নির্দেশনায় চীনের বন্ধু-প্রতিম জনগণের সুস্বাস্থ্য, সুখ ও অব্যহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করেন।
সূত্র : বাসস