আগামী ২৩, ২৪ ২৫ এ তিন দিন মহররমের আইএমএ বিযের সিয়াম

আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১
0

আইয়ামে বীয/বীদ্ব মানে “উজ্জ্বলতম দিনসমূহ।” আরবি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রাতগুলো খুবই উজ্জ্বল দেখায়। প্রতি মাসের এই তিনদিন রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম (রোযা) পালন করতেন। এজন্য এই সিয়ামের নাম হয়েছে “আইয়ামে বীদ্ব/বীয।” উল্লেখ্য, আরবি দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে। অর্থাৎ, মাগরিবের পর থেকে নতুন দিন ও তারিখ শুরু হয়।

মহররমের আইয়ামে বিজের রোজা: আবার হিজরি সনের প্রথম মাস মহররমে আইয়ামে বিজের ৩ দিন রোজা রাখার বিষয়টিতো আছেই। আবার ২৩-২৫ আগস্ট (১৩-১৫ মহররম) আইয়ামে বিজের রোজা রাখতে পারে। সে হিসেবে মহররমে ৬ দিন রোজা পালন করতে পারে।

মহররমে রোজা রাখার ফজিলত: মহররম মাসে আশুরা উপলক্ষে রোজা রাখার ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। আশুরায় রোজা রাখা সম্পর্কে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদিসে গুরুত্বারোপ করেছেন। হাদিসে এসেছে-
১. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আশুরার দিনের রোজার উপরে অন্য কোনো দিনের রোজাকে প্রাধান্য দিতে দেখিনি এবং এ মাস অর্থাৎ রমজান মাস (এর উপর অন্য মাসের গুরুত্ব দিতেও দেখিনি)।’ (বুখারি)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, আমি আশা রাখি যে, এর দ্বারা বিগত এক বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসলিম)

২. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মহররম মাসের ১০ তারিখে নিজে রোজা রাখলেন এবং অন্যদের রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবাগণ বললেন- হে আল্লাহর রাসুল! এই দিনকে ইয়াহুদি-নাসারারাও মহান দিন হিসেবে পালন করে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যখন সামনের বছর আসবে তখন ইন শা আল্লাহ আমরা ৯ মহররম রোজা পালন করব। হজরত ইবনে আব্বাস(রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেছেন, পরবর্তী বছরের মহররম মাস আসার আগেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করেছিলেন।’ (মুসলিম)

এই রোযার ফযিলত:
রসূলুল্লাহসল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখে, তা যেন সারা বছর রোযা রাখার সমান।” [তিরমিযি: ৭৬২, ইবনু মাজাহ: ১৭০৮, সহিহ আত তারগিব: ১০৩৫]

চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে এই সিয়াম রাখা সুন্নাত। আবু যার (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, “হে আবু যার! প্রতি মাসে তুমি তিন দিন সিয়াম রাখতে চাইলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রাখ।” [তিরমিযি: ৭৬১]

আবু দরদা রদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “আমার প্রিয় বন্ধু (রসূলুল্লাহ ﷺ) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না। সেগুলো হচ্ছে, প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা (আইয়ামে বীয-এর তিন দিন) পালন করা, সালাতুদ দোহার নামাজ পড়া এবং বিতর না পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া” (মুসলিমঃ ৭২২, আবু দাউদঃ ১৪৩৩, আহমাদঃ ২৬৯৩৫)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “রসূলুল্লাহ ﷺ বাড়ীতে থাকাবস্থায় অথবা সফরে থাকাবস্থায়, কখনোই আইয়ামে বীযের রোযা ছাড়তেন না” (নাসায়ী ২৩৪৫, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন)