আজ ১৪ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী মুক্ত দিবস

আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২১
0

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
আজ ১৪ নভেম্বর।১৯৭১ সালের এই দিনে ভূরুঙ্গামারী পাক-হানাদার বাহিনীর কবল থেক মুক্ত হয়। দেশের প্রথম হানাদার মুক্ত উপজেলা হচ্ছে ভূরুঙ্গামারী।কিন্তুু সরকারি স্বিকৃতি মিলেনি। সরকারি স্বিকৃতির দাবি নিয়ে কাজ করছেন বিভিন্ন সংগঠন।

তাই এই দিনটি পরবর্তী প্রজন্মকে জানিয়ে দিতে প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন,মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় ভূরুঙ্গামারী প্রেসক্লাব দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে।
দিবসটি পালন উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র‌্যালি, পদক বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

ওই সময়ের রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে ও বিভিন্ন সূত্রের তথ‍্যে জানা যায়,মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ৬ নং সেক্টরের অধীনে ছিল।ওই সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাহেবগঞ্জ সাব-সেক্টরের মাধ্যমে ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণ দিক খোলা রেখে পশ্চিম, উত্তর ও পুর্ব দিক থেকে এক যোগে আক্রমণের সিন্ধান্ত নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ নেতৃত্বে প্রবল আক্রমণ শুরু হয়। ১৩ নভেম্বর মিত্র বাহিনীর কামান, মর্টার প্রভৃতি ভারী অস্ত্র দিয়ে গোলা বর্ষণ শুরু হয় এবং ভারতীয় যুদ্ধ বিমান আকাশে চক্কর দিতে থাকে। অবশ্য এর একদিন আগে থেকেই মিত্র বাহিনীর বিমান শত্রুদের উপর গোলা বর্ষণ শুরু করেছিলো। ভোর হবার আগেই পাকবাহিনীর গুলি বন্ধ হয়ে যায়।

এসময় পাক সেনারা পিছু হটে পাশবর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ নামক স্থানে অবস্থান নেয়। ১৪ নভেম্বর ভোরে মুক্তি বাহিনী জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও সিও (বর্তমান উপজেলা পরিষদ) অফিসের সামনে চলে আসে। এসময় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। যুদ্ধে একজন পাক ক্যাপ্টেন (আতাউল্লা খান) সহ ৪০/৫০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ৩০/৪০ জন পাকসেনা আটক করা হয়।

ওই সময় সিও’র বাসভবন (বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন) এর দোতলায় তালা বদ্ধ অবস্থায় কয়েকজন নির্যাতিতা মহিলাকে উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া যায়। এদের অনেকে ৫/৬ মাসের অন্তসত্বা ছিলেন। এভাবে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি তালা বদ্ধ কক্ষ থেকে ১৬ জন নির্যাতিতা মহিলাকে উদ্ধার করা হয়।

ভূরুঙ্গামারী দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসেবে সরকারি স্বীকৃতির বিষয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বই “উত্তর রনাঙ্গনে বিজয়”বই এর লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকতারুজ্জামান মন্ডল বলেন আমরা এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। খুব দ্রুতই এর সমাধান পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
###
আমিনুর রহমান বাবু