আটকৃকত ছাত্রদের মুক্তি দিন ,তারা কাউকে খুন বা বলাৎকার করেনি যে জামিন হবে না— ডা. জাফরুল্লাহ

আপডেট: মে ৩, ২০২১
0

আজ ৩ এপ্রিল, সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ অভিভাবক ও নাগরিক সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, `আটককৃত ওই ছাত্ররা কি কাউকে খুন করেছে, বলৎকার করেছে, চাঁদাবাজি বা ছিনতাই করেছে। তারা মানুষের অধিকারের কথা বলেছে, যৌক্তিক প্রতিবাদ করেছে।

মানুষের অধিকারে কথা বলা যদি অপরাধ হয় আমিও সেই একই অপরাধে অপরাধী। আমাকেও গ্রেফতার করুন। ১৯৫২ সালে ছাত্ররা অধিকারের কথা বলেছে বলেই আমরা ভাষার অধিকার পেয়েছি। দেশ স্বাধীন হয়েছে। অনেক স্বৈরশাসক সরকারের পতন হয়েছে।‘

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু বলেন, `মোদির আগমনের প্রতিবাদ জানিয়েছি। আপনারা দেখেছেন মতিঝিলে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কিভাবে পুলিশ হামলা করেছে, ছাত্রদের আটক করেছে। গ্রেফতার করে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা বাইরে আছে তাদের আতঙ্কে রাখা হচ্ছে, ভয় ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। যেসব পুলিশ ছাত্র নির্যাতনের নেতৃত্ব দিয়েছে, সরকার তাদের নানা ভাবে পুরস্কৃত করছে। আমরা অন্যায়, অত্যাচের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি।‘

ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বারের মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস বিজয়ী হওয়াতে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিস্তা সমস্যা সমাধান করার আহবান জানান। বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সরাসরি একজন মুক্তিযোদ্ধার কন্যা কলেজ ছাত্রী হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার পরও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। কারন দেশে আইনের শাসন নাই , তাই আজ নিরব মেধাবী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করে জেলে বন্দি করে রেখেছেন।এ অপশাসন থেকে বাঁচার উপায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিপি বলেন, `ছাত্রদের পরিবার সহ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঈদের আগে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি না দিলে আমাদের ঈদ হবে গণ ভবনের সামনে।‘

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, `খুবই দুঃখ লাগে একটা সরকার কত দুর্বল হলে কিছু ছাত্রের ভয়ে কাঁপতে হয়। তাদের গ্রেফতার তো করেছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। রিমান্ড খুবই ফালতু জিনিস এখানে নির্যাতন করা ছাড়া কোন কাজ নেই। যারা প্রশ্ন করে তাদের নিজেদেরও কোন ধারনায় নেই, দেশে কি হচ্ছ। আমরা কি চাই, কেন চাই তার যৌক্তিকতা আছে কিনা।‘

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, `গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিনজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কি করছেন। ৫১ জনের মধ্যে পাঁচজন কাশেমপুর কারাগারে বন্ধুদের দেখতে গিয়েছিল। সেখানে তাদের আটক করা হয়। এই সরকার পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে ভয় এবং ত্রাস সৃষ্টি করতে চায়। ছাত্রদেরকে আজকে ভয় দেখানো হচ্ছে। এদেশের ছাত্র সমাজ এর জবাব দিবে। এমন অন্যায় চলতে থাকলে আপনাদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অতি দ্রুত উৎখাত হবে।‘

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সুজনের বদিউল আলম মজুমদার,জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী, রাস্ট্র চিন্তার সদস্য এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ।

পরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কারাবন্দী ছাত্রদের মুক্তির ব্যপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান সঙ্গে দেখা করেন। ভিসি সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, জোনায়েদ সাকি, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, গ্রেপ্তারকৃত ছাত্র বেনিয়াম মোল্লার পিতা রফিকুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।