আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শাহজাহান খানের মৃত্যুর ঋণ পরিশোধ করা হবে—- মীর্জা ফখরুল

আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২২
0

সরকারের নির্যাতনের জবাব জনগন আন্দোলনেই দেবে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

 

ধানমন্ডির ল্যাবএইডে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ শাহজাহান খানের মৃত্যুর সংবাদের পর সেখানে পরিবারের সদস্যদের সাত্বনা জানানোর শেষে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।

 

তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনের আপনারা জানেন ইতিমধ্যেই এই চলমান আন্দোলনে আমাদের ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, দুইজন আওয়ামী লীগের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন। আর আজকে একজন সাবেক সংসদ সদস্য তাদের নির্যাতনে আজকে তার জীবন চলে গেলো।”

 

‘‘ এই অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগন জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শাহজাহান খানের এই যে মৃত্যু এটার আমরা পরিশোধ করতে সক্ষম হবো, জনগন এর উপযুক্ত জবাব দেবে।”

 

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ধানমন্ডির ল্যাবএইডে চিকিতসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহজাহান খান।

 

গত ৪ নভেম্বর পটুয়াখালী থেকে বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে তেলিখালী এলাকা অতিক্রমকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালালে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে আহতাবস্থায় এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর।

 

আহতাবস্থায় পটুয়াখালীর একটি হাসপাতালে শাহজাহান খানকে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবণতি হলে গত ২২ নভেম্বর তাকে ল্যাবএ্ইডে ভর্তি করা হয়।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তিনি বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হযেছেন এবং তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে সেদিন আহত করা হয়েছিল্। এই আহত হওয়ার পরে তার কিডনি ফেটে যায়… তার সমস্ত শরীরে বিষাক্ত রক্ত আসে। আজকে সকালে তিনি মারা গেছেন।”

 

‘‘ জনাব শাহজাহান খানের মৃত্যু আমাদের দক্ষিনাঞ্চলের জন্য বিরাট শূণ্যতা সৃষ্টি করবে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জন্য। আজীবন সংগ্রামী,ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা তার জনগনের কাছে একজন অভিভাবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি, গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তার পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা প্রকাশ করছি।”

 

বিএনপি মহাসচিব প্রয়াত শাহজাহান খানের মরদেহের সামনে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান শিমুল, আইনজীবী ফো্রামের নুরুল ইসলাম জাহিদসহ পটুয়াখালীর নেতারা ছিলেন।

 

শাহজাহান খানের ছেলে শিপলু খান বলেন, তার বাবা সকাল সাড়ে ১০টায় মারা যান।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে তার বাবা কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যাচ্ছিলেন। পটয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের গাবুয়া এলাকা অতিক্রমের সময় তার বাবা গাড়িতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা চালায়।তারা বাবাকে লাঠি, রড় ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম করে।”

 

শাহজাহান খানের মৃত্যু সংবাদ শুনার পর দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে ছুটে যান। তিনিও পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

 

পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার বাদ জোহর নয়া পল্টনে জানাজার পর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে সড়ক পথে নিয়ে যাওয়া হবে পটুয়াখালীতে। সেখানে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা কার্যালয়ের সামনে, ১১টায় দশমিনা উপজেলায়, বাদ জোহর গলাচিপা উপজেলায় এবং শেষ জানাজা বিকাল তিনটায় চিকনিকান্দি ইউনিয়নে হবে। সেখানে মায়ের কবরে তাকে দাফন করা হবে।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর পৃথক পৃথক শোকবার্তায় শাহজাহান খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।