আষাঢ় এলো সজীবতার পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘে

আপডেট: জুন ১৫, ২০২৪
0

শাহীন হাসনাত:

আজ পহেলা আষাঢ়। বর্ষার প্রথম দিন।
ষড়ঋতুর বাংলায় বর্ষা আসে খরতপ্ত জনজীবন ও নিসর্গে সজল সুখদ পরশ জাগাতে। গ্রীষ্মের দহনে প্রাণ ও প্রকৃতি যখন ওষ্ঠাগত। তখনি বর্ষার বৃষ্টিরা আসে স্বস্তি ও সৃষ্টির অমোঘ মেঘমাল্লার সুরে। রিমঝিম ছন্দে বাদল দোলায় আসমান, জমিন আর প্রাণপ্রাচুর্যে আনে নবধারা জলের মুগ্ধতা। কালোমেঘের ছায়ায় আনমনা হয় প্রতিটি মন। বিরহ বিলাসে হৃদয়ে কাঁপন তুলে গেয়ে ওঠে “মেঘের পরে মেঘ জমেছে আঁধার হয়ে আসে, আমায় কেন দাঁড়িয়ে রাখো একেলা দ্বারের পাশে”। নদীর জলের সাথে পাল্লা দিয়ে কাঁপুনি বাড়ে গায়ের বধু’র নায়ওরি পরাণ। বাড়ির ঘাটের পাশে দাঁড়িয়ে বিরহী বধু ডাকে “কে যাসরে ভাটি’র নাও বাইয়া, আমার ভাইজানরে কইও নাইওর নিতো আইয়া।”
বৃষ্টি’র ছোঁয়ায় ফসলের ক্ষেতে ও নতুন পানিতে বাড়ে সবুজের আবাদ। কদম-কেতকীর গন্ধে প্রতিটা সন্ধা আনমনা হয় বিরল বাতাসের ঘ্রাণে। দহন দিনের অবসানে প্রতিটা প্রাণ খুঁজে মেঘমাল্লার মালিক আর বৃষ্টির হুকুমদাতাকে। বিশ্বাসের উদ্যানে নতুন জোয়ারে পল্লবিত হয় আস্থাবাদী হৃদয়ের সজীবতা ।
হে মহাকালের মালিক, তোমার রহমতের স্নিগ্ধতায় ভাসিয়ে নাও আমাদের সকল পাপ। বৃষ্টির ধোয়ায় শুদ্ধ করো বান্দার দুনিয়া ও আখেরাত। তোমার অনন্ত ক্ষমার আকাশে ভেজা কদমের রেণুর মত উড়িয়ে নাও আমাদের সকল ম্লানতা। বৃষ্টি ভেজা সকালের মতই আমাদের সজীব করো তোমার ঐশ্বর্যে।।
বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায় ঘুচিয়ে দাও সকল মালিণ্য। প্রাণে প্রাণে জাগিয়ে তুলো কদম-কেয়া’র স্নিগ্ধতা।
হে আকাশ-জমিন, বাতাস ও মেঘমাল্লার মালিক, আমরাতো কেবল তোমারই মুখাপেক্ষী ও তোমার কাছেই ফিরে যাবো। আমাদের সকল পাপের উষর-দহন থেকে মুক্ত করতে তোমার ধরিত্রীকে করুণাধারায় ভিজিয়ে দাও। বৃষ্টির ছোঁয়ায় জাগিয়ে দাও ক্ষমা, উর্বরতা ও সমৃ
দ্ধির অনন্ত প্রান্তর। লেখক :সিনিয়র সাংবাদিক, দিগন্ত টেলিভিশন