ইফতারের সময় চেয়ে বাশঁখালিতে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত৫ : বাপার নিন্দা শাস্তির দাবী

আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২১
0

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত ও ২৫ জন আহতের ঘটনায় বাপা সভাপতি সুলতানা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে নিন্মোক্ত বিবৃতি প্রদান করছেন।

বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত স্থানীয় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত কাজের পারিশ্রমিক, শুক্রবার অর্ধদিবস কাজ ও ইফতারের জন্য বিরতির যৌক্তিক দাবিতে চলমান বিক্ষোভে গুলিতে বহুসংখ্যক হতাহতের ঘটনায় বাপা’র পক্ষ থেকে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, আজ ১৭ এপ্রিল, ২০২১ শনিবার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ‘এস আলম’ গ্রুপের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত স্থানীয় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত কাজের পারিশ্রমিক, শুক্রবার অর্ধদিবস কাজ ও ইফতারের জন্য বিরতির যৌক্তিক দাবিতে চলমান বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হবার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনগণের দাবীকে উপেক্ষা করে বাঁশখালির এই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্বার্থরক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এহেন বেপরোয়া আচরণ নতুন কোন ঘটনা নয়।

২০১৬ সালের ৪ঠা এপ্রিল একই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণের সময়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৪ জন নিহত ও বহুসংখ্যক গ্রামবাসী আহত হয়, যার গ্রহণযোগ্য কোন নির্মোহ তদন্ত ও বিচার অদ্যাবধি হয় নাই। আমরা সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের ন্যাস্ত দায়িত্ব পালন না করে উল্টা পুলিশ বাহিনী কতৃক এমন নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও মানুষ হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। উল্লেখ করা আবশ্যক যে ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পটি স্থাপনের জন্য বিপিডিবি জেভিসিকে অভিপ্রায়মূলক/উদ্দেশ্যমূলক চিঠি প্রদান করেছে ।

চুক্তি অনুসারে, জেভিসির অধীনস্থ এসএস পাওয়ার ১ লিমিটেড এবং এসএস পাওয়ার ২ লিমিটেড নামক দুটি পৃথক বিদ্যুৎ সংস্থা আলাদাভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করার কথা। প্রকল্পটিতে এসইপিসিও ৩ ইলেকট্রিক পাওয়ার কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন এবং এইচটিজি ডেভলপমেন্ট গ্রুপ নামক দুটি চীনা সংস্থার যথাক্রমে ২০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ, এবং এস আলম গ্রুপের ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে ।

অংশীদার হওয়া ছাড়াও, চাইনিজ এসইপিসিও ৩ ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন এই প্রকল্পের প্রকৌশল, সংগ্রহ ও নির্মাণ, বা ইপিসি এবং ঠিকাদারের দায়িত্বে রয়েছে। সরকারী বাহিনী কতৃক সাধারণ মানুষকে হত্যা করে দেশি-বিদেশি ব্যাবসায়ীক স্বার্থরক্ষার এমন ন্যাকারজনক ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। তদুপরি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সকল সময়েই জনস্বার্থ ও মানবতা বিরোধী হিংস্রতার প্রতীক।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বাঁশখালির আজকের ঘটনায় জড়িত খুনিদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং ২০১৬ সালের হত্যাকাণ্ড সহ উভয় ঘটনার স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের যথাযথ শাস্তির দাবী জানায়। পাশাপাশি বাপা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিসমুহ মেনে নিয়ে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকারক এই প্রকল্পসহ সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ বাতিলের দাবী জানাচ্ছে।