ইসরাইলী দানবগুলোর পৈশাচিকতার বিচার চায় বিশ্বজনমত

আপডেট: মে ২৯, ২০২১
0

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল বাশিলেট গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের ব্যাপারে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন।
এ রিপোর্টে দেখা গেছে বায়তুল মুকাদ্দাস শহরের শেইখ জাররাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার ইসরাইলি প্রচেষ্টা ও মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি সেনা মোতায়েনের কারণেই সেখানে সাম্প্রতিক উত্তেজনাগুলো দেখা দিয়েছে। একই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদিও ইসরাইল দাবি করেছে যে গাজায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর ওপরই ইসরাইল বোমা বর্ষণ করেছে কিন্তু এইসব হামলায় হতাহত হয়েছে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্থাপনাগুলো ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলো ব্যবহার করেছিল এমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি বলেও মিশেল বাশিলেটের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসরাইল সম্প্রতি গাজায় আগ্রাসনের সময় বহু বেসামরিক বাসভবন ধ্বংস করেছে এবং এতে প্রায় আড়াই’শ বেসামরিক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। শহীদ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত ৬৮ শিশু ও প্রায় ৪০ জন নারীও রয়েছে। এ ছাড়াও আহত হয়েছে কয়েক হাজার।

দেখা গেছে ইসরাইল অতীতেও যে কোনো যুদ্ধে গণহত্যা ও সব কিছু ধ্বংস করার মত পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে এসেছে প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোকে ধ্বংস করার অজুহাত দেখিয়ে। নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহারের মত যুদ্ধ-অপরাধেও লিপ্ত হয় শিশু-ঘাতক এই শাসকগোষ্ঠী। আবাসিক এলাকার বাসভবন, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, স্কুল ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কার্যালয়ও ইসরাইলের পৈশাচিক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা যে এইসব বেসামরিক স্থাপনাকে সামরিক কাজে ব্যবহার করেনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট থেকেই তা স্পষ্ট।

এই কমিশনের রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে গাজা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার। ইসরাইল ২০০৭ সাল থেকে এ অঞ্চলের ওপর সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ফলে সেখানে প্রায়ই ওষুধ, খাদ্য ও জ্বালানীর সংকটসহ নানা মানবীয় সংকট দেখা দেয়। আর এসবই হচ্ছে মানবতার বিরুদ্ধে ইসরাইলের অব্যাহত অপরাধযজ্ঞের অংশ।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের গতকালের ওই রিপোর্টের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করতে কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। এ পদক্ষেপটি ইসরাইল ও তার সহযোগী সরকারগুলোর জন্য একটি বড় চপেটাঘাত।

আশা করা যায় এই কমিটির তদন্ত রিপোর্ট ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের সব অজুহাতগুলোকে আরও বেশি অসার ও ভিত্তিহীন বলে প্রমাণ করবে এবং এবার ইসরাইলি নেতাদের যুদ্ধ-অপরাধেরও বিচার হবে। আর ওই বিচারের সম্ভাব্য রায়ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া উচিত।বিশ্বজনমতমানুষরূপী ইসরাইলী দানবগুলোর পৈশাচিকতার বিচার চায়।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্ব-সমাজের জোরালো ও ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপকে সন্ত্রাসী ইসরাইলি নেতারা ইহুদি-বিরোধী পদক্ষেপ বলে দাবি করলেও এইসব দাবি বা কোনো সাফাই এখন আর ইসরাইলী অপরাধযজ্ঞকে ঢেকে রাখতে সক্ষম হবে না। কারণ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ইন্টারনেট-ভিত্তিক মাধ্যমগুলো থেকে বিশ্ববাসী এখন খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে যে কে জালিম ও কে মজলুম! #

পার্স টুডে