উজিরপুরে রিমান্ডের আসামীকে যৌন নির্যাতন: ওসি ও তদন্ত ইন্সপেক্টেরর কঠোর শাস্তি চায় মহিলা পরিষদ

আপডেট: জুলাই ৫, ২০২১
0

বরিশাল জেলার উজিরপুর থানায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের সাথে জড়িতদের বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণসহ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক যথাযথ আইনে ব্যবস্থাগ্রহণ এবং অপর একটি ঘটনা রাজধানীর বাসাবো এলাকায় ‘অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়া’ এক স্কুলছাত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতেদের শাস্তি নিশ্চিতকরণে দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতি প্রদান করেছে।

মহিলা পরিষদ বলেছে , গত ২৮ জুন ওই নারীকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়ার পরপরই এক নারী পুলিশ সদস্যসহ উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্যরাও তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয় এবং ২৯ জুন তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গত ০২ জুন ২০২১ শুক্রবার রিমান্ড শেষে বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের উজিরপুর আমলি আদালতে ওই নারীকে তোলা হলে তিনি অভিযোগ করেন ২৯ জুন রিমান্ডে নেওয়ার পর পরের দিন সকালে তাঁকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কক্ষে পাঠানো হলে সেখানে তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন চালানো হয়। এরপর এক নারী পুলিশ সদস্যসহ তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মারধর করে।

অপর একটি ঘটনা: গত ০৪ জুন ২০২১ তারিখ শামীম ও ফাহিম নামের দুই যুবক “প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর অশ্লীল ছবি ধারণ করে তা ছড়িয়ে দিয়ে ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখালে ৪জুন রবিবার রাতে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।” এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা সোমবার সকালে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতায় লক্ষ্য করছে যে- বর্তমানে বাসস্থান, রাস্তা-ঘাট, গণপরিবহণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা নারীরা যৌন নিপীড়ন, ধর্র্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাসহ নৃশংস নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী ও কন্যার নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা নারীকে শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন এবং স্কুলছাত্রীকে আত্মহত্যায় ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

থানা হেফাজতে নারীকে নির্যাতের ঘটনার সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক তাদের যথাযথ আইনে শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। স্কুলছাত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে। নির্যাতনের শিকার নারীর সুচিকিৎসাসহ তার ও স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে। সেইসাথে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সারাদেশে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।