উৎসবে মাতোয়ারা সবুজ পাহাড়

আপডেট: এপ্রিল ১৪, ২০২৩
0

পাহাড়ে মারমা সম্প্রদায়ের বর্ণাঢ্য সাংগ্রাই উৎসব ও বর্ষবরণ

আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:: মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে নানা আয়োজনে মেতে উঠেছে সম্প্রদায়টির নানা বয়সীরা। ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং উৎসব মারমা সম্প্রদায় নিজেদের জানান দিতে প্রতি বছরেই বর্ণাঢ্য আয়োজন করে থাকে। মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব মাহা সাংগ্রাইং উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী রি-আকাজা (জলকেলি) উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য সংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল ২০২৩)সকালে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়া মারমা উন্নয়ন সংসদের আয়োজনে মারমা যুব কল্যাণ সংসদের সহযোগিতায় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মাহা সাংগ্রাইং উৎসব উপলক্ষে বটতল প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

মারমা উন্নয়ন সংসদ প্রাঙ্গণে মঙ্গল প্রদীপ ও বেলুন উত্তোলন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তিনি বলেন, আজকে এই সাংগ্রাইং উৎসবকে গিরে আমরা আগামী দিনের পথ চলার এখান থেকে খুঁজে পাব। আমাদের মধ্যে যে গ্লানি, দু:খ বেদনা ভুলে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে এই মুর্হুত। সুখে শান্তিতে স্মৃতিতে যে বসবাস করতে পারি। দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে যে ঐক্যবব্দ থেকে বাংলাদেশ থেকে সকল নৈরাজ্য সকল জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ সকল অপশক্তিকে আমরা উৎখাত করার মধ্য দিয়ে আমরা যেন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, একত্রিত হই এবং এই একত্রিত মধ্য দিয়ে আমরা শপথ করি যে আগামী নতুন বছর পুরাতন বছরকে বাদ দিয়ে নতুন বছরের পা রেখেছি সেই আজকের দিন থেকে আমরা প্রতিজ্ঞাবব্দ হয়ে আজ করি। এ অঞ্চলকে যেন সুখে শান্তিতে সম্প্রতিতে রাখতে পারি সকলের মুখে হাঁসি ফুটানোর জন্য সকলেই মিলে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

পরে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শুরু করে দশটায় শহরের পানখাইয়াপাড়া এলাকার মারমা উন্নয়ন সংসদ মাঠ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করে শাপলা চত্বর ঘুরে হাসপাতাল হয়ে পানখাইয়াপাড়ায় এসে শেষ হয়। পরে সাংগ্রাইং উৎসবের প্রধান আকার্ষণ রি-আকাজা (জলকেলি) উৎসব শুরু হয়। শোভাযাত্রায় মারমা তরুণ তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী নানা বর্ণিল পোশাকে নেচে গেয়ে উৎসবকে মুখরিত করে।পরে পানখাইয়াপাড়াস্থ মারমা উন্নয়ন সংসদের প্রাঙ্গণে অন্যতম আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী জলকেলী বা পানি খেলা উৎসবে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। উৎসব উপলক্ষে মারমা পাড়ায় চলে ঐতিহ্যবাহী নানা খেলাধুলা।

মংপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন- সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি বাসন্তী চাকমা,খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ,খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক পিপিএম,খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু,জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল মো. আবুল হাসনাত,পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী,খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর মো. জাহিদ হাসান।

এছাড়াও জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শানে আলম,জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলা মং চৌধুরী, মারমা উন্নয়ন সংসদের উপদেষ্টা চাইথোঅং মারমা, জেলা পরিষদের সদস্য মংক্যাচিং চৌধুরী,খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় দাস, ভাইস চেয়ারম্যান মো: আকতার হোসেনসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশ নেয়।

এদিকে খেলাধুলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক উমংচিং মারমা বলেন, রীতি অনুযায়ে প্রতেক বছর হয়। অতিতের যত দুঃখ, ক্লানি মুছার জন্য এই অনুষ্ঠান পালন করি। সাংগ্রাই উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব নিয়ং মারমা বলেন, মাহা সাংগ্রাইংয়ে রি-আকাজা (জলকেলি) উৎসব আমাদের প্রধান ঐতিহ্য। ১৯৮২ সাল থেকে মারমা উন্নয়ন সংসদ এই উৎসব পরিচালনা করে আসছে। বৃদ্ধ বুড়া-বুড়িদের নিয়ে শুরু হয়েছে গোসল করানো।
বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা
এর আগে সকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সমানে থেকে শুভ নববর্ষ-১৪৩০ বঙ্গাব্দ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় জেলা প্রশাসক। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে টাউন হলে গিয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।


এতে সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি বাসন্তী চাকমা,খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ,খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক পিপিএম,খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু,জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী,খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর মো. জাহিদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের অংশ গ্রহণে মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্ণিল হয়ে উঠে। বাঙ্গালীর চির চায়িত চেনা সেই রূপে নানা সাজে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বিভিন্ন সংগঠন। আয়োজন করা হয় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার।

আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি