“ওরা কাঁদছে আর আমি হাসছি : ‘এমন নিরেট প্রেম দেখে বিমোহিত”

আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২১
0

ওরা কাঁদছে আর আমি হাসছি !!
ডা হিমুর ফেসবুক স্টাটাসটি গল্প হলেও সত্যি । বাংলাদেশের প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর বেচেঁ থাকো সর্দি-কাশি গল্পের মতোই। তবে প্রেক্ষাপট ভিন্ন , সময়টা ভিন্ন। নিরেট প্রেম থাকলেও এখন আর মানুষ খুব একটা বিশ্বাস করে না।

প্রতিদিনই খবরের কাগজে দেখা যায় স্বামী স্ত্রীকে খুন করছে আবার স্ত্রী স্বামীকে খুুন করছে। আর এর বেশিরভাগই কাহিনী পরকীয়াকে কেন্দ্র করে। আবার বাবা – মায়ের পরকীয়ার বলি হচ্ছে সন্তানরা । আবার রবীন্দ্রনাথের কাব্যর মতোই— ”একটি সাধারণ মেয়ের গল্প লেখো তুমি/বড়ো দুঃখ তার। তারও স্বভাবের গভীরে/ অসাধারণ যদি কিছু /তলিয়ে থাকে কোথাও /কেমন করে প্রমাণ করবে সে/ এমন কজন মেলে যারা তা ধরতে পারে/ কাঁচা বয়সের জাদু লাগে ওদের চোখে /মন যায় না সত্যের খোঁজে /আমরা বিকিয়ে যাই মরীচিকার দামে।”
বিশ্ব জুড়েই এমন বিশ্বাস -অবিশ্বাস, ভালোবাসা, ভালোবাসাহীন দোলাচলে দুলছে জীবন।

তবে নিরেট প্রেম নিয়ে বাংলাদেশে এবার গল্পের মতো সত্য খবর জানালেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু ।

তার ফেসবুকে দেয়া এমন ঘটনাই হুবুহু তুলে ধরা হলো —- চেম্বারে বসে আছি। একজন রোগী আসলেন, তিন দিন ধরে কথা বলতে পারছেন না।
কারণ কি জানতে চাইলে স্বামী জানালেন যে, তিনি গার্মেন্টসে কোয়ালিটি কন্ট্রোলে কাজ করেন। তার পাশের বাসার এক মেয়ে দুষ্টামি করে মেয়েটিকে বলেছে, ওর স্বামী বিয়ে করেছে।

তারপর থেকে মেয়েটি কথা বলছে না। তিন দিন ধরে কথা বলছে না, কান্না করছে শুধু।
স্বামীকে দেখে খুব চিন্তিত মনে হলো। তিন বছরের একটা মেয়ে আছে।
কিছুক্ষণ সাইকোথেরাপিতে মেয়েটি কথা বলার চেষ্টা শুরু করল। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে মেয়েটির। এটা দেখে ছেলেটার চোখ টমলম করছে।

অনেক কষ্ট হচ্ছে মেয়েটা কথা বলতে। মেয়েটার চোখ দিয়েও পানি পড়ছে। কিছুক্ষণ চেষ্টার পর মেয়েটা তার নাম পরিষ্কার করে বলতে পারলো। কাঁদছে মেয়েটি, অঝোরে কাঁদছে ছেলেটা। দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। আমার উপস্থিতি কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলো।

ওরা কাঁদছে আর আমি হাসছি। চিকিৎসা পেশা ভালো লাগে একারণে, অনেক কিছুর সাক্ষী হওয়া যায়।
পত্রিকায় খারাপ ঘটনা পড়তে পড়তে অভ্যস্ত আমি, এমন নিরেট প্রেম দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম।
এখনো ভালোবাসা আছে, আছে প্রেম।