কক্সবাজার হিমছড়ীতে পর পর ভেসে আসলো দুটি মৃত তিমি

আপডেট: এপ্রিল ১১, ২০২১
0

শাহীন মঈনুদ্দীন উখিয়া থেকেঃ
কক্সবাজারের হিমছড়ি পয়েন্টের সমুদ্র সৈকতে জোয়ারে ভেসে এলো বড় আকৃতির আরও একটি মৃত তিমি। এ নিয়ে পরপর দুদিন দুটি মৃত তিমি ভেসে এলো।
তিমি দুটির ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই টন। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সমুদ্রে জাহাজের সাথে আঘাত পেয়ে অথবা বিষাক্ত কিছু খেয়ে মারা যেয়ে থাকতে পারে তিমি দুটি।

লকডাউনের কারণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এখন জনশূন্য। নির্জন সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে শুক্রবার সকালে জোয়ারের পানির সাথে ভেসে আসে একটি মৃত তিমি। ভাটার সময় সেটি আটকে যায় বালিয়াড়িতে। তিমিটির আনুমানিক ওজন ২ থেকে আড়াই টন।

একদিন পরে শনিবার দরিয়ানগর পয়েন্টে ভেসে এলো আরেকটি তিমি। এটির ওজনও ২ থেকে আড়াই টন বলে ধারণা স্থানীয়দের। তিমি ভেসে আসার খবরে অনেকেই ভিড় করেন সৈকতে।
সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তিমি দুটি একই প্রজাতির। গভীর সমুদ্রে ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় মৃত্যু হতে পারে তাদের। অথবা প্লাস্টিক বর্জ্য খেয়েও মারা যেতে পারে।

পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে ধারণা করা হচ্ছে কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে তিমি দুটির।মৃত তিমি অপসারণে কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সৈকতে মৃত তিমি ভেসে আসে। তবে সেসব ঘটনার কোন তদন্ত হয়নি। তিমি মারা যাওয়ার রহস্য উদঘাটন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সেভ দ্যা নেচারের প্রেসিডেন্ট মোয়াজ্জেম হোসেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন আরো বলেন, গত ২ বছরে প্রায় ৫ টি ব্রাইড’স হোয়েল প্রজাতির তিমি ও ২৭ টি ডলফিনের মৃত দেহ ভেসে আসে ককসবাজার, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সংলগ্ন সমুদ্র উপকূলে। তিমিগুলোর সকলই ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির ছিল।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় প্রতিটি তিমির পোর্ষ্টমর্টেম দেশীয় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সমুদ্র বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ত্তত্ত্বাবধানে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি সার্জন দ্বারা না করে দ্বায়সারা ভাবে করার ফলে সুনির্দিষ্ট মৃত্যুর কারন জানা সম্ভব হয়নি কখনো। সমুদ্রে অপরিকল্পিত ট্রলিং এর জালে আটকে বা আঘাত প্রাপ্ত হয়ে বা সমুদ্র দূষণের কারনে বা সমুদ্র গর্ভে প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগের কারনে তিমির মৃত হতে পারে।

তবে ২৪ ঘন্টায় একই স্থানে দুটি একই প্রজাতির প্রাপ্ত বয়স্ক তিমির মৃত্যু বড় ধরনের মেসেজ হতে পারে প্রকৃতির। তাই সতর্ক ভাবে যতটা দ্রুত সম্ভব মনিটরিং এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি।

তাই সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় সমুদ্র কমিশন গঠনের মাধ্যমে নীতিমালা প্রনয়ন ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশিক্ষিত আধুন প্রযুক্তি সমৃদ্ধ রেসকিউ টিম গঠন করা খুব জরুরী বলে মনে করছি।