“করোনা অভিঘাতে বর্তমান শিক্ষা সংকট এবং উত্তরণের উপায় ও আমাদের করণীয়” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট: মে ৩১, ২০২১
0

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (হা-ন) কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে আজ ৩০ মে ২০২১ দুপুর ১২ টায় “করোনা অভিঘাতে বর্তমান শিক্ষা সংকট এবং উত্তরণের উপায় ও আমাদের করণীয়” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (হা-ন) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আহসান হাবীব শামীমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হক ননীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, শরিফুল কবির স্বপন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়াও এ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাসুদ আহাম্মেদ, ওসমান গনি, আরিফুল হক পাপ্পু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল রাজবংশী, সহ-সম্পাদক হাসানাতুজ্জামান বাবু, আব্দুল মজিদ, আব্দুর রহমান, মিজানুর রহমান মজুমদার, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুমন্ত রায়, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, সদস্য জুয়েল রানা প্রামাণিক, তানিয়া ইসলাম তন্বী, হাসান আজিজ জনি, বিদ্যুৎ হোসেন, সহ জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির ভাষণে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, অসাম্প্রদায়িক সার্বজনীন ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধানের চার মূলনীতির মধ্যে একটি সমাজতন্ত্র। যা সরকারি আমলা ও সরকারি দলের নেতারা বলতে লজ্জা পান। সংবিধানের এ মূলনীতি মাথায় নিয়ে চলতে পারেন কিন্তু বলতে লজ্জা পান।

তিনি বলেন, পুঁজিবাদী মুনাফার পেছনে ছুটা অর্থনীতি সমাজে বৈষম্য কমাতে পারবে না। পুঁজিবাদী মুনাফার পেছনে ছুটা অর্থনীতি সার্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে না। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কমতি-ঘাটতি রয়েছে। দেশে অনেক ধরনের শিক্ষা আছে। ইংরেজি, বাংলা, মাদ্রাসা, কিন্ডার গার্ডেনের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা বিভিন্ন মানুষ তৈরি করে। শিক্ষার একটা মান থাকতে হবে, প্রাথমিক অথবা মাধ্যমিক পর্যায়ে একই ধরনের শিক্ষা থাকতে হবে।

মানব সম্পদ গড়তে সার্বজনীন শিক্ষার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমরা এখন তৃতীয় বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে রয়েছি। উন্নত দেশ গড়তে সবার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। করোনাকালে আমরা দেখেছি, গ্রাম-শহরে, ধনী-গরীবে মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য আছে। ফলে সব ছেলে মেয়েদের সমানভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তিনি আসন্ন বাজেটে শিক্ষাসহ এ সকল খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি বলেন, করোনায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বড় ধরনের সংকটের মুখোমুখি করেছে। ক্লাশ, পরীক্ষা বন্ধ থাকায় দেশের অনেক জায়গায় মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। পারিবারিক আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য ছেলেদের কাজে লাগানো হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সমাজে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করছে। সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার যে বিকল্প ব্যবস্থা করেছে তা সফল হয়নি। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার উপায় খুঁজতে হবে।

ড. মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, ১৫ মাস ধরে শিক্ষাকার্যক্রম যেভাবে চলছে সেভাবে চলতে পারে না। আমাদের এখন সময় এসেছে বিকল্প ভাবনার। শিক্ষার সাথে সরাসরি যুক্ত শিক্ষক-ছাত্র-শিক্ষাবিদদের পরামর্শ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আমাদের দেশের আমলারা পুরানো ধ্যানধারনার মধ্যেই রয়েছে। করোনা-কালে শিক্ষা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত শিক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে না। গ্রামে ইন্টারনেটের গতি খুবই কম, ডিভাইস সহজলভ্য নয়। তাই সরকারি উদ্যোগে সফট লোন দিয়ে বিশেষ ডাটা প্যাক দিয়ে অনলাইন শিক্ষার যে প্রচেষ্টা করা হয়েছিল তা ফলপ্রসূ হয়নি।

তিনি বলেন, ক্লাশ হয় পরীক্ষা হয়না। তাই ছাত্ররা এ ধরনের শিক্ষায় অনাগ্রহী হয়ে পরেছে। অনলাইন কার্যক্রম দায়সারাভাবে চলছে। দেশে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২২০ টি হলে দ্বৈত আবাসিক আবসিক গণরুমে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী থাকে। শিক্ষক-ছাত্রদের জরুরি ভিত্তিতে টিকা প্রদান করতে হবে। তিনি আরো বলেন, উচ্চ শিক্ষায় পরীক্ষা সংক্রান্ত বিধিমালায় অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ না থাকায় পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই এই বিধিমালা সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। করোনাকে মৌসুমী রোগ হিসাবে বিবেচনা করে একটি জাতীয় পরামর্শ কমিটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষাকে সচল করারও উদ্যোগ নিতে হবে। এ জাতীয় পরামর্শ কমিটিতে শিক্ষা প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
বার্তা প্রেরক