করোনা ও যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছি–প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২২
0

করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রী করোনা ও যুদ্ধ না হলে আমরা হয়ত আরো এগিয়ে যেতে পারতাম বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, করোনার কারণে শুধু আমরা নই, পুরো বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যুদ্ধের কারণে বিশ্বে বিভিন্ন জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সারের মূল্য বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।

বুধবার (৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ এবং ‘শেখ জামাল ডরমেটরি ও রোজী জামাল ডরমেটরি’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। গ্যাসের জন্য আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অস্বাভাবিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এজন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন উপায় একটাই, এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং। এখন সে দিকে নজর দিতে হবে। মানুষ যাতে প্রস্তুত থাকে এজন্য আগেই লোডশেডিংয়ের কথা জানানো হবে। এ ব্যাপারে তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম, ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে, এলএমজির দাম বেড়ে গেছে। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালিয়ে রাখাটাই একটা কষ্টকর। অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ফার্নেস ওয়েলের দাম ৬২ পার্সেন্ট বেড়েছে। কয়লা যা ছিল ১৮৭ ডলার, এখন ২৭৮ ডলার। ১০০ পার্সেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজেল ছিল ৮০ ডলার, এখন তা ১৩০ ডলারে চলে গেছে। এটা নাকি ৩০০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে সারা বিশ্ব।

সরকারপ্রধান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হলেও নিষেধাজ্ঞা না থাকলে এসবের দাম বাড়তো না। আমরা এখন ডলার দিয়েও রাশিয়া থেকে জিনিসপত্র কিনতে পারছি না।

যা থাকছে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে

শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রায় ৫ একর (৪ দশমিক ৭ একর) জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে- স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, এক্সিবিশন/প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি।

উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (অও) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধা প্রভৃতি।

অন্যদিকে, মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি (একটি নারী ও একটি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দুটি মিনি সুপার কম্পিউটার সম্বলিত অত্যাধুনিক গবেষণা ল্যাব শিগগিরই স্থাপিত হতে যাচ্ছে চুয়েটে।