করোনা ঝুঁকিতে হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে–মেডিকেল বোর্ড

আপডেট: জুন ২৪, ২০২২
0

করোনা ঝুঁকির কারণেই অসুস্থ খালেদা জিয়াকে তার বাসায় স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তার মেডিকেল বোর্ড।

শুক্রবার বিকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘‘ ম্যাডাম এখনো অসুস্থ। তিনি যে অবস্থায় এসেছিলেন সেই অবস্থা থেকে স্টেবল। কিন্ত বাকীগুলো যেমন বিল্ডিং কমপ্লিকেশন ইটস এ ভেরি চ্যালঞ্জিং গেইম নাউ। কিডনি কমপ্লিকেশন আমরা ওয়াকওভার করেছি। উনি হাই রিস্ক অব বিল্ডিং। এখনো উনার দুইটা ব্লক এখনো রয়ে গেছে।”

‘‘ সার্বিক পরিস্থিতির জন্য কোভিড বাড়তেছে, উনাতে এখানে রাখতে চাচ্ছি না। কারণ কোভিড প্লাস ইনফেকশন ইজ এ চান্স। এসব কারণে তার যদি এগুলো হয় তাকে আবার ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে নিয়ে চলে যাবে। সেজন্য আমরা পূর্নাঙ্গ মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, তাকে আপাতত বাসায় নেয়া হোক।”

‘পরে যদি কোনো কমপ্লিকেশন হয় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে’ বলে জানান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন।

‘‘ উনার বিল্ডিং চান্স ইজ ভেরি ভেরি হাই। উনি রিস্কে আছেন। বাসায় থাকলেও পুরো মনিটরিংয়ে উনাকে আমাদের রাখতে হবে। আমরা তাকে সন্ধ্যার মধ্যে রিলিজ দেবো।”

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বুকে ব্যথা নিয়ে গত ১০ জুন গভীর রাতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান তিনি বলেন, ‘‘ আরো যে দুইটা ব্লক রয়েছে। আমাদের আন্তর্জাতিক গাইড লাইন হচ্ছে যে, যেই রক্তনালীর ব্লকের জন্য তার সমস্যা হচ্ছে ওটা করে চলে আসো। ডু ইট এন্ড কামঅন এন্ড সেইভ দ্যা পেসেন্ট।আমরা ওটা করেছি।”

‘‘ এখন দ্বিতীয়টা করি, তৃতীয়টা করি- কোনো কোনো পেসেন্টের করা হয় যেসব পেসেন্ট শকে থাকে। যারা দেখতেছে তারা মরে যাবে যদি না করি অথবা রক্তনালীগুলো বড় থাকে, যাদের কোনো কমপ্লিকেশন নাই, যাদের লিভার ডিজিস নাই, কিডনি ডিজিস নাই, চান্স অব হার্ট ফেলিউর নাই-তখন আমরা করে আসি। আদার-ওয়াই আমাদের সেকেন্ড-থার্ড করার কোনো নিয়ম নাই। কারণ আপনি দেখেন উনার(খালেদা জিয়া) একটা ব্লক অপসারণ করতে গিয়ে তার কিন্তু কিডনি সার্টডাউন হয়েছে, হার্ট ফেইলিউর হয়েছে। ওই দু্টা যদি করতাম তার কিডনি টোটাল সার্টডাউন হতো। সেজন্য আমরা ওই দুইটা ব্লক অপসারণ করিনি।”

মেডিকেল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘ ম্যাডামের অনেক জটিল অসুস্থতা আছে। উনার রেনাল ফিলিউর, উনার বিল্ডিংয়ের চান্স, উনার যে সিরোসিস অব লিভার সেটা কিন্তু রয়ে গেছে। সেটার কোনো চিতিকসা হয় না। আমরা শুধু উনার বিল্ডিং স্পটগুলোকে লাইগেশন করে দিয়ে বন্ধ করে রেখেছি। সেগুলোর কি অবস্থায় গত ৬ মাসে আমরা কিন্তু ফলোআপ করতে পারিনি। এখন এই কার্ডিয়ার কন্ডিশনের জন্য উনার ফলোআপ করাটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা যা করার করছি। আল্লাহর অশেষ রহমত, আমরা সামহাউ আমাদের সিদ্ধান্তগুলো এখন পর্যন্ত অলনাইট আপটু হার সারভাইভেল।”

‘‘ আমরা বার বার বলছি যে কমপ্রেহেনসিভ সব জটিলতাকে একটা বেস্ট সেন্টারে নিয়ে উনাকে সুস্থ করে তোলার যে প্রক্রিয়া যেটা কিন্ত আমরা এখানে করতে পারছি না। সেই ধরনের সেন্টার সেই ধরনের মেজার্স, সেই ধরনের সব কিছু করার সক্ষমতায় আমাদের অভাব আছে। সেজন্যই আমরা সবসময় বলেছি, এখনো বলছি যে, উনার সঠিক, সার্বিক, সুষ্ঠু চিকিতসা এই দেশে সম্ভব নয়। সেটা বিশ্বের কিছু উন্নত দেশের্ উন্নত সেন্টারে করতে পারলে সেটা উনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।”

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিতসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘ আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, উনার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমানসহ উনার পরিবারের সকল সদস্য হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিতসক, নার্স, প্যারামেডিকস এবং ম্যানেজমেন্টের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”

‘‘ বিএনপির চেয়ারপারসন দেশবাসী কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।এটা আপনাদের(গণমাধ্যম) মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে পৌছে দেয়ার জন্য এবং উনার জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিকেল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউল উপস্থিত ছিলেন।