কষ্টের আরেক নাম গাজীপুরের জয়দেবপুর- পূবাইল সড়ক !!

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
0

স্থানীয়দের ধারণা প্রতিহিংসার শিকার হয়ে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা তৈরী হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের জয়দেবপুর পূবাইল সড়ক পুরোটাই খানাখন্দকে ভরা। নগরবাসী ভোগান্তির শেষ নেই। কূর্তৃপক্ষ দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছে রাস্তাটি থেকে। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রপত্রিকা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বছরের পর বছর রাস্তাটির বেহাল অবস্থা নিয়ে নিউজ ও ফিচার প্রকাশিত হয়েছে। কিন্ত রাস্তাটির উন্নয়নতো দূরের কথা, আরো বেহাল অবস্থা তৈরী হয়ে জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌছেছে। নগরবাসীর জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পরেছে।জীবন যাত্রার ব্যায়ও বেড়েগেছে বহুগুন।প্রতিদিন চোখের জল ফেলে যাত্রা শুরু হয় নগরবাসির। এখন নগরবাসির কষ্টের আরেক নাম হয়ে উঠেছে জয়দেবপুর পূবাইল সড়ক। স্থানীয় জনগণের ধারণা প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বর্তমানে রাস্তাটির এই বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গাজীপুর মহানগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত জয়দেবপুর –পূবাইল সড়কটির বেহাল অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। প্রায় ৯ কিলোমিটর দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য অবস্থায় রয়েছে । সড়কের মাঝে অসংখ্য খানাখন্দ, ছোটবড় গর্ত পূরো রাস্তাটিকে যাত্রী দুর্ভোগের এক অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত করেছে। সড়কটি বর্তমানে মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছ। যানবাহন চলাচলে অহরহ দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটছে। সড়কের গর্তে প্রতিনিয়ত যানবাহন আটকা পড়ে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিগত ৫ বছর যাবৎ রাস্তাটির এ অবস্থায়ও নজর পড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সামান্য সংস্কার বা মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়নি গাজীপুর সিটি করপোরেশন। প্রায় প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ জাতীয় পত্রপত্রিকায় ওই সড়কের অচলাবস্থা নিয়ে নিউজ ছাপা হচ্ছে। কোন অবস্থাতেই টনক নড়ছেনা কর্তৃপক্ষের। শহরের সাথে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সংযোগ ও কালিগঞ্জ হয়ে নরসিংদী যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন যাতায়াত করছে।
জানা যায়, গাজীপুর শহরের মহিলা কলেজের সামনে থেকে নীলের পাড়া হয়ে পূবাইল কলেজ গেট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি প্রায় ৫ বছর আগে সংস্কার করে গাজীপুর সিটি করপোরশেন কর্তৃপক্ষ। কিন্ত সংস্কারের ২/১ মাস পরই রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দক সৃষ্টি হতে থাকে। ক্রমেই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেলে সাময়িকভাবে ইটের টুকরা, বিল্ডিংয়ের ধ্বংসাবশেষ ও খোয়া দিয়ে কয়েক দফা নামমাত্র সংস্কার করা হয়। কিন্ত এ ধরনের সংস্কারে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগি না হয়ে ক্রমে ক্রমে আরো খারাপ হতে থাকে। রাস্তাটি দিয়ে মালভর্তি ট্রাক, বড় বড় লড়ি,কাভার্ডভ্যান, লেগুনা , সিএনজি, অটোরিকশা সিলেট মহাসড়ক থেকে গাজীপুর শহরে চলাচল করে। এছাড়া সিলেট থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তাগামী ঢাকা বাইপাস সড়কে যানজট এড়াতে যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য যানবাহন এ রাস্তাটিকে বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে এ সড়কটি দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পরিনত হয় । কিন্ত গুরুত্ব অনুধাবন করে সেভাবে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বর্তমানে এটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে সড়কটি একটি মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে ।
স্থানীয় জনগণ জানান, এ রাস্তাটি দিয়ে নিয়মিত আমরা অফিসে ও বাড়ীতে যাতায়াত করি। কিন্ত রাস্তাটি দিয়ে বর্তমানে চলাচল কতটা কষ্টকর তা বলে বোঝানোর ভাষা নেই ।
ক্ষাভ প্রকাশ করে এলাবাসি জানান, এ রাস্তাটির কোন অভিভাবক নেই । রাস্তাটি দিয়ে কোন যানবাহনে যাওয়া তো দূরের কথা , বর্তমানে পায়ে হেটেও যাওয়া যায় না। রাস্তাটি নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও মিডিয়াতে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও কোন প্রতিকার হয়নি। কর্তৃপক্ষের যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়।
গাজীপুর মহনগরের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি অথচ বর্তমানে সবচেয়ে অবহেলিত। আগে এ সড়কটি দিয়ে নীলের পাড়া, কানাইয়া, ইছালি ও পূবাইল এলাকায় প্রায় ৫শতাধিক অটো চলাচল করতো । এসব অটো দিয়ে শহরের স্কুল কলেজে ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতো । কিন্ত বর্তমানে মাত্র ২শ”র মতো অটো চলে অনেক ঝঁুকি নিয়ে । বিভিন্ন সময় এসব অটো বিভিন্ন গর্তে পড়ে উল্টে যায় এবং বাস ট্রাক আটকা পরে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তা বন্ধ থাকে। প্রায় প্রতিনিয়ত যানবাহন চলাচলে দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটছে।এলাকাবাসি অবিলম্বে এ রাস্তাটি জরুরী ভিত্তিতে দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মজিবুর রহমান কাজল জানান, রাস্তাটি ৬০ ফুট প্রশস্ত করার জন্য জমি অধিগ্রহনের কাজ চলছে। জমি অধিগ্রহন কার্যক্রম শেষ হলে রাস্তাটির সংস্কার কাজ করা হবে। এতে আরো সময় লাগতে পারে। তবে বর্তমানে রাস্তাটির অচলাবস্থা নিরসনের জন্য ইস্টিমেট তৈরী করা হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে সামিয়কভাবে সংস্কার কাজ করার জন্য কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এতেও সময়ের প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটিকর্পোরেশনের অপর এক কর্মকর্তা জানান, জিসিসির সাময়িক বরখাস্থকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সময়ে রাস্তাটি ৬০ ফুট প্রসস্থ করে নতুন ভাবে করার জন্যে মোটা অংকের বাজেট এসেছিল।কিন্তু নানা জটিলতার কারণে জাহাঙ্গীর আলম সেই কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি।যেহেতু ওই সড়কটি জাহাঙ্গীর আলমের নিজগ্রাম ও ওয়ার্ডের মধ্যদিয়ে গেছে তাই বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়রের ওইদিকে দৃষ্টি নেই। স্থানীয়রা জানান,প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আমরা রাস্তাটি নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।