কাশ্মীরে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে ভারত

আপডেট: ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
0

ভারত-শাসিত কাশ্মীরের কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে নিষিদ্ধ ইসলামি আন্দোলন জামাত-ই-ইসলামির সাথে যুক্ত একাধিক নেতার বাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। ফলে, দীর্ঘদিন ধরে অশান্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ওই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যাপক ভাবে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সর্বসাম্প্রতিক ঘটনা ঘটে গত শনিবার। একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে, ওইদিন রাজ্য তদন্তকারী সংস্থার সুপারিশে কমপক্ষে ২০টি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এছাড়া আরও ডজন খানেক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও একটি নাটকীয় ঘটনা ঘটে, যখন ভারতীয় বাহিনীকে গত ২০ ডিসেম্বর উচ্চবিত্ত এলাকার শ্রীনিগার পাড়ার একটি দোতলা বাড়ি দখলের জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। ওই বাড়িটি একসময় বিশিষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলী গিলানির বাড়ি ছিল, যিনি গত বছর মারা যান।

স্থানীয় পুলিশের উপস্থিতিতে ভারতের শীর্ষ সন্ত্রাস-তদন্তকারী জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এই অভিযান চালায়।

সরকারী প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গিলানি পরিবারের একজন সদস্য, ভিওএ-এর সাথে কথা বলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, বর্তমানে ওই বাড়ির মালিক কে।

তিনি বলেন, “বাড়িটি সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর। তবে আমরা সেখানে অল্প সময়ের জন্য বসবাস করতাম।”

২০১৯ সালের মার্চ মাসে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে জামায়াত-ই-ইসলামী বা জেআই-কে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। ১৯৪১ সালে ইসলামী সংস্কারবাদী আন্দোলন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটিকে “ভারত-বিরোধী জঙ্গি সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ” রাখার অভিযোগে এবং কাশ্মীর উপত্যকায় “বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন” গড়ে তুলতে সাহায্য করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

তবে, জেআই এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে বলেছে, তারা কেবলই একটি সামাজিক-রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠন। জঙ্গিবাদের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, যারা কয়েক দশক ধরে কাশ্মীরকে অশান্ত করে রেখেছে।

রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা নামে একটি নবগঠিত স্থানীয় পুলিশ বাহিনী দ্বারা সাম্প্রতিক সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
১৮ ডিসেম্বর, এসআইএ জানায়, কাশ্মীর ১.২১ কোটি ডলার] মূল্যের জেআই-এর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
ভিওএ-এর পক্ষ থেকে মন্তব্যের জন্য একাধিক জেআই সদস্যের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু প্রতিশোধের ভয়ে কেউই কথা বলতে রাজী হয়নি।

নিরাপত্তার কারণে তার আসল নাম ব্যবহার না করার অনুরোধে একজন আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, রাষ্ট্র কর্তৃক যে কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা তখনই উচিত, যখন আদালত নির্ধারণ করে যে, সম্পত্তিটি একটি বেআইনী সংস্থার অন্তর্গত।

ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, “সরকারের উচিত ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ না করে, বরং আইনের অধীনে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি অনুসরণ করা।