কুরবানীর পশু নিয়ে শেষ মুহুর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত দিন কাটছে সৈয়দপুরের খামারিদের

আপডেট: জুন ২৭, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে কুরবানির পশু নিয়ে চরম ব্যস্ততায় দিন কাটছে খামারিদের। ইতোমধ্যে বেচাকেনা শুরু হওয়ায় অনেকেই আবার ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। তবে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধিতে নতুন করে লকডাউনের ঘোষণায় শেষ পর্যন্ত সব পশু বিক্রি করা নিয়ে শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ি মহল্লায় সাবেক খালেদ গুল কোম্পানির ফ্যাক্টরি চত্বরে গড়ে তোলা মেসার্স ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট খামার ও ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি শেডে প্রায় ২ শতাধিক বিভিন্ন জাতের গরু ও ছাগল লালন-পালন করা হচ্ছে।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সকল প্রকার রাসায়নিক উপাদান ও ঔষধ ব্যবহার ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে দেশীয় খাদ্য ও গাছ গাছড়ার নির্জাস (ওষুধ) খাইয়ে এসব গরু ও ছাগল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবছরের মত এবারও বিভিন্ন অফার দিয়ে খামারটি ক্রেতাদের আকর্ষণ করছেন।

করোনাকালে হাট বাজারের ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এই খামারের কোরবানির পশু কিনে খামারেই রাখছেন বাকী দিনগুলোর পরিচর্যার জন্য। এতে কুরবানীদাতারা বাড়তি ঝামেলামুক্ত থাকার সাথে সাথে খরচ ও রোগাক্রান্ত বা দূর্ঘটনা জনিত ঝুঁকি থেকেও মুক্ত থাকছেন।

খামারের মালিক রোটারিয়ান জামিল আশরাফ মিন্টু জানান, বাবা মরহুম হাজী শাহাবুদ্দিন গুল, সাবান ও জর্দা তৈরির ব্যবসা করতেন। তাঁর উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত খালেদ গুল ও ওসামা আগরবাতি উত্তরবঙ্গের নাম্বার ওয়ান পন্য।

কিন্ত সেখানে মন বসাতে না পেরে কয়েক বছর আগে সামান্য পুঁজি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেন। কিন্ত এখন আর পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি তাকে। ইতোমধ্যে ক্রেতা ও সচেতন মানুষের যথেষ্ঠ আস্থা অর্জন করেছে খামারটি।

তিনি বলেন, গরু-ছাগল কিনে খামারে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতা চাইলে খামারে জবাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়। নিজস্ব পরিবহনে কোরবানির গরু ও ছাগল বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিক্রির সময় প্রাণিসম্পদ বিভাগের সুস্থ্যতার সনদপত্র দেওয়া হয়। তার খামারে ৪০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকার পর্যন্ত গরু রয়েছে।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুল হক জানান, সৈয়দপুরে ছোট-বড় মিলে ২ শতাধিক খামার থাকলেও নিবন্ধিত খামার রয়েছে ১২০টির মতো। এরমধ্যে ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট খামারটির বৈশিষ্ট হলো, এ খামারে কোনো ধরনের রাসায়নিক, এন্টিবায়েটিক বা মেশিনে তৈরী খাবার ব্যবহার করা হয়না।

এসবের পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত প্রাকৃতিক খাদ্যপন্য ও ওষুধ দিয়ে বছরব্যাপী মোটাতাজাকরণ করা হয় পশু। প্রাণিসম্পদ বিভাগের সার্বক্ষণিক নজরদারি ও পরামর্শে খামারটি করে আয় ও সম্ভাবনার মুখ দেখছেন এই খামারের মালিক।

একইভাবে শহরের গোয়ালপাড়া, কুন্দল, বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া, হাতিখানা, গোলাহাটসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে একাধিক খামারের পশু পালনকারীরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দেশীয় জাতের গরু ও ছাগল প্রতিপালন করে এখন বিক্রির জন্য শেষ মুহুর্তের ব্যস্ত সময় পার করছেন।